Loading...
Loading...

মুছে ফেলা যায়, যদি চিন্তার দিকটা বদলাতে জানেন
কখনও কি ভেবে দেখেছেন —
আমরা কত সহজে বলি,
“জীবনটা যদি পেন্সিলের কালি হত, তাহলে ইরেজার দিয়ে সব মুছে আবার শুরু করতাম!”
এই কথাটা সাধারণ মনে হলেও এর ভেতর লুকিয়ে আছে এক বিশাল সত্য।
কারণ, জীবন আসলে পেন্সিলের কালি — কেবল আপনি এখনো ইরেজারটা খুঁজে পান নি।
জীবন হলো এক চলমান খাতা।
আমাদের জীবনটা যেন এক খাতা, যেখানে প্রতিদিন আমরা কিছু না কিছু লিখে ফেলি —
হয়তো কোনো ভুল বাক্য, কোনো অসম্পূর্ণ শব্দ, বা কোনো সুন্দর পঙ্ক্তি।
কখনো পৃষ্ঠা ভিজে যায় অশ্রুতে, কখনো ঝলমল করে হাসিতে।
কিন্তু আপনি জানেন কী?
এই খাতাটা কখনো পূর্ণ হয় না, যতক্ষণ আপনি লিখে চলতে থাকেন।
আপনি যেদিন লেখা বন্ধ করেন, সেদিনই জীবন থেমে যায়।
আপনি অতীত মুছতে পারবেন না, কিন্তু আপনার জীবনের ঘটনার ফলাফল বদলাতে পারবেন।
অতীত হলো কালি লাগা সেই দাগ, যেটা আপনি ইরেজার দিয়ে পুরোপুরি মুছতে পারবেন না।
কিন্তু চাইলে সেটির মানে বদলাতে পারবেন।
একটা ব্যর্থতা মানে “শেষ” নয়, বরং “শুরু” বলার আরেকটা ভাষা।
আপনি যদি সেই ঘটনাকে ব্যথা নয়, শিক্ষা হিসেবে দেখেন —
তাহলে আপনার জীবন বইয়ের সেই ভুল পৃষ্ঠা রঙিন হয়ে ওঠে।
আপনি যা দেখছেন ‘ভুল’ হিসেবে, ভবিষ্যৎ হয়তো সেটাকেই দেখবে ‘অভিজ্ঞতা’ হিসেবে।
চিন্তার শক্তি — আপনার জীবনের সত্যিকারের ইরেজার
প্রকৃত ইরেজার কোনো বস্তু নয়,
তা হলো আপনার “চিন্তা বদলানোর ক্ষমতা”।
মস্তিষ্কের নিউরোসায়েন্স বলে —
আপনি যেভাবে ভাবেন, সেভাবেই আপনার মস্তিষ্কের পথ তৈরি হয়।
আপনি যদি প্রতিদিন নিজেকে বলেন,
“আমার সময় শেষ,”
তাহলে মস্তিষ্ক আপনাকে সত্যিই থামিয়ে দেয়।
কিন্তু আপনি যদি প্রতিদিন নিজেকে বলেন,
“আমি আবার শুরু করছি,”
তাহলে মস্তিষ্ক নতুন সংযোগ তৈরি করে,
পুরোনো হতাশা মুছে নতুন আশা জাগায়।
দুঃখকে ঘৃণা নয়, বুঝে নিন।
আমরা অনেকেই দুঃখকে মুছে ফেলতে চাই, যেন সেটাই জীবনের দাগ।
কিন্তু দুঃখ আসলে এক শিক্ষকের মতো, যে চুপচাপ আপনাকে নতুন করে গড়ে তোলে।
আপনি যদি দুঃখকে প্রতিপক্ষ মনে করেন, সে আপনাকে হারাবে;
কিন্তু যদি তাকে শিক্ষক মনে করেন, সে আপনাকে শক্তিশালী বানাবে।
“জীবনের ইরেজার দুঃখ নয়, বরং দুঃখ থেকে শেখার ক্ষমতা।”
প্রতিটি দিনই এক নতুন পৃষ্ঠা।
আজ আপনি যেখানে আছেন, তা হয়তো গতকালের ভুল সিদ্ধান্তের ফল।
কিন্তু আজকের সিদ্ধান্তই আপনার আগামীকাল বদলে দেবে।
আপনি যদি আজ ভাবেন “সব শেষ”, তবে সত্যিই সব শেষ।
আর যদি ভাবেন “এখন শুরু”, তবে পৃথিবীর কোনো শক্তিই আপনাকে থামাতে পারবে না।
প্রতিটি ভোর আপনাকে নতুন সুযোগ দেয় —
আপনার খাতায় নতুন বাক্য লেখার,
আপনার অতীতের দাগের উপর সুন্দর ভবিষ্যৎ আঁকার।
জীবন এক শিল্পকর্ম — দাগগুলোই তার সৌন্দর্য
চলুন, বাস্তবতাকে একটু নতুনভাবে দেখি —
একটি নিখুঁত চিত্রকর্ম কেমন হবে, যদি তাতে কোনো দাগই না থাকে?
একঘেয়ে, প্রাণহীন।
কিন্তু দাগ, ছায়া, উজ্জ্বলতা — সব মিলেই তো এক শিল্পকর্ম সম্পূর্ণ হয়।
তেমনি আপনার র জীবনও দাগবিহীন নয় —
তবে সেই দাগগুলোই আপনার গল্পের সৌন্দর্য।
আপনার র দুঃখ, আপনার র ব্যর্থতা, আপনার চেষ্টা — এদের মিলেই গঠিত হয়েছে আপনার আসল রূপ।
শেষ কথা: মুছে ফেলার নয়, গড়ে তোলার গল্প লিখুন
জীবন পেন্সিলের কালি —
আপনি হয়তো সময়কে মুছে ফেলতে পারবেন না,
কিন্তু আপনি চিন্তার বদলে সেই সময়ের মানে নতুন করে লিখতে পারবেন।
প্রতিদিন নিজেকে মনে করিয়ে দিবেন —
“আমি আমার চিন্তার মাধ্যমে জীবনের দাগগুলোকে আলোতে রূপ দিচ্ছি।”
যেদিন আপনি এটা অনুভব করবেন,
সেদিন থেকে আপনার প্রতিটি দাগই হয়ে উঠবে সোনালী শিক্ষা,
আর আপনার জীবন হবে এক অনুপ্রেরণার গল্প।
যেখানে পেন্সিলের কালি হয়ে যায় আলোর রেখা।
Abu Taher
Author

ভালোবাসা নয়, এখন প্রয়োজন দিকনির্দেশনা
ভূমিকা
বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ—একটি যুগ যেখানে তথ্য, বিনোদন এবং যোগাযোগ হাতের মুঠোয়। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক—সবার জীবন আজ ডিজিটাল ডিভাইসের চারপাশে আবর্তিত। স্মার্টফোন, ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, এবং গেমস এখন শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়; এগুলো আজ আমাদের মানসিকতা, চিন্তাধারা এবং জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণেও ভূমিকা রাখছে।
কিন্তু এই সহজলভ্য প্রযুক্তির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে আমাদের টিনএজার সন্তানদের ওপর—যারা এখনো মানসিকভাবে পূর্ণাঙ্গ নয়, কিন্তু তথ্যের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। এই বাস্তবতায় পিতা-মাতার ভূমিকা শুধু ভালোবাসা দেওয়ায় সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না; বরং এখন প্রয়োজন সচেতন দিকনির্দেশনা, মানসিক সহায়তা, ও বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্ব।
ভালোবাসা যথেষ্ট নয় কেন?
প্রত্যেক পিতা-মাতা সন্তানকে ভালোবাসেন। সেই ভালোবাসাই আমাদের সমাজে পারিবারিক বন্ধনের ভিত্তি। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে—অতিরিক্ত ভালোবাসা বা অনিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা সন্তানদের ভুল পথে ঠেলে দিতে পারে।
অনেকে সন্তানকে “আমার ছেলে/মেয়ে যা চায় তাই করুক” এই চিন্তা থেকে পুরোপুরি স্বাধীনতা দেন।
আবার কেউ কেউ “আমার সন্তান যেন কষ্ট না পায়” ভেবে তার সব চাওয়া পূরণ করেন।
ফলাফল হিসেবে—
👉 সন্তানরা স্বাধীনতার মানে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছে,
👉 দায়িত্ববোধ হারাচ্ছে,
👉 অতিরিক্ত আরামপ্রিয় ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে।
প্রযুক্তি যখন হাতের নাগালে, তখন এই স্বাধীনতা আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ইউটিউব, টিকটক, অনলাইন গেম, ফেসবুক—এইসব প্ল্যাটফর্ম আজ কিশোরদের চিন্তা, আচরণ, ও আত্মমূল্যবোধ গঠনে অজান্তেই প্রভাব ফেলছে।
প্রযুক্তির প্রভাবে বদলে যাচ্ছে শিশুমন
প্রযুক্তি শিশুর শেখার ও যোগাযোগের নতুন সুযোগ এনে দিলেও এর অপব্যবহার ধীরে ধীরে তাদের মানসিক ও সামাজিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
মনোযোগের ঘাটতি: দ্রুত বদলে যাওয়া ভিডিও ও রিলস শিশুর মস্তিষ্ককে অস্থির করে তুলছে।
তুলনামূলক মানসিকতা: সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যের “ভালো জীবন” দেখে নিজের প্রতি অস্বস্তি ও হীনমন্যতা তৈরি হচ্ছে।
ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব: বাস্তব জীবনের বন্ধুত্বের চেয়ে ভার্চুয়াল যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, যা সামাজিক দক্ষতা কমিয়ে দিচ্ছে।
ডোপামিন আসক্তি: প্রতিটি ‘লাইক’ ও ‘কমেন্ট’ শিশুর মস্তিষ্কে একধরনের আনন্দ হরমোন (dopamine) সৃষ্টি করে, যা একসময় আসক্তিতে পরিণত হয়।
পিতা-মাতার ভূমিকা এখন কী হওয়া উচিত?
প্রযুক্তির যুগে সন্তানকে প্রতিপালন করা মানে শুধু খাওয়ানো, পড়াশোনায় উৎসাহ দেওয়া বা ভালোবাসা নয়—বরং সচেতন মন ও মস্তিষ্ক গঠন করা।
প্রযুক্তি সম্পর্কে নিজে জানুন
সন্তান কোন অ্যাপ ব্যবহার করছে, কোন কনটেন্টে সময় দিচ্ছে—এগুলো জানতে হবে। অনেক পিতা-মাতা এসব বিষয়ে অজ্ঞ থাকেন, ফলে সন্তানদের ভুল দিকনির্দেশনা চোখ এড়িয়ে যায়।
খোলামেলা আলোচনা গড়ে তুলুন
নিষেধাজ্ঞা নয়, বোঝানোর সংস্কৃতি তৈরি করুন। সন্তানকে “না” বলার আগে তাকে বোঝান “কেন না”। এতে সে নিজেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা গড়ে তুলবে।
নির্দিষ্ট স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করুন
প্রতিদিনের নির্দিষ্ট সময় প্রযুক্তি ব্যবহারের অনুমতি দিন এবং সেই সীমা মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
বিকল্প আনন্দের উৎস তৈরি করুন
বাইরের খেলাধুলা, বই পড়া, পারিবারিক আড্ডা, সৃজনশীল কাজ—এইসবের প্রতি আগ্রহ তৈরি করুন যাতে ফোনই একমাত্র আনন্দের উৎস না হয়।
আদর্শ হয়ে উঠুন
সন্তান যা দেখে, তাই শেখে। আপনি যদি নিজে ফোনে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকেন, সন্তানও তাই করবে। তাই নিজের আচরণেই তাকে শিখিয়ে দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের সঠিক ধরন।
দিকনির্দেশনা মানে কী?
দিকনির্দেশনা মানে নিয়ন্ত্রণ নয়; বরং সচেতনভাবে পরিচালনা করা। সন্তানকে এমনভাবে শিক্ষা দিন যেন সে নিজেই সঠিক-ভুল চিনে নিতে পারে।
দিকনির্দেশনার তিনটি স্তম্ভ হতে পারে—
1. চিন্তার দিকনির্দেশনা: কীভাবে ভাবতে হয়, তা শেখানো।
2. মানসিক দিকনির্দেশনা: মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা শেখানো।
3. নৈতিক দিকনির্দেশনা: সঠিক মূল্যবোধে বড় করা।
উপসংহার
প্রযুক্তির এই বিস্ফোরণময় যুগে সন্তান লালন-পালন আগের চেয়ে অনেক জটিল হয়েছে। শুধু ভালোবাসা দিয়ে নয়, সচেতন মানসিক নেতৃত্ব দিয়েই সন্তানকে সঠিক পথে পরিচালিত করা সম্ভব।
মনে রাখুন—
“সন্তানকে আপনি যে পৃথিবীটা দিয়ে যাচ্ছেন, সেটি আপনার কথায় নয়, আপনার আচরণে তৈরি হবে।”

সাফল্যের জন্য কোনো অজুহাত নেই, ব্যর্থতার জন্য অনুমতি নেই
“Success requires no apologies, failure permits no alibis.” -Napoleon Hill
এই সংক্ষিপ্ত বাক্যটি এক জীবনের দর্শনকে ধারণ করে। এখানে বলা হয়েছে—যখন আপনি সফল হন, তখন পৃথিবীকে আর কোনো ব্যাখ্যা দিতে হয় না। কিন্তু যখন আপনি ব্যর্থ হন, তখন পৃথিবী আপনার কোনো অজুহাতই গ্রহণ করে না।
আজকের ব্লগে আমরা এই নীতির গভীরে প্রবেশ করব—মনস্তাত্ত্বিক, বৈজ্ঞানিক এবং বাস্তব জীবনের আলোকে বিশ্লেষণ করব কেন সাফল্য কোনো অজুহাত চায় না, আর ব্যর্থতা কোনো অজুহাত মানে না।
কেন সাফল্যের জন্য কোনো অজুহাত লাগে না?
সাফল্য এমন এক ভাষা, যা ব্যাখ্যা ছাড়াই বোঝা যায়।
আপনি যদি একজন কৃষক হিসেবে নতুন জাতের ধান উৎপাদন করেন, যা হাজারো পরিবারকে খাওয়ায়, আপনার পরিচয়ের প্রমাণ সেই ফসল।
আপনি যদি একজন উদ্যোক্তা হিসেবে হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেন, তখন আপনার ব্যাখ্যা নয়, আপনার অবদানই কথা বলে।
আপনি যদি পড়াশোনায় শীর্ষে ওঠেন, তখন আপনার সার্টিফিকেটই প্রমাণ, আপনাকে আর কাউকে বোঝাতে হয় না।
সাফল্য একধরনের নীরব শক্তি—এটি সমালোচককে চুপ করিয়ে দেয় এবং সমর্থককে আরও জোরালো করে তোলে।
ব্যর্থতার জন্য কোনো অজুহাত নেই কেন?
মানুষ যখন ব্যর্থ হয়, তখন প্রায়শই শোনা যায়—
“সময় পাইনি।”
“সুযোগ ছিল না।”
“পরিস্থিতি খারাপ ছিল।”
“অন্যরা সাহায্য করেনি।”
কিন্তু বাস্তবতা হলো, অজুহাত কখনো সফলতা এনে দেয় না।
ইতিহাসের শিক্ষাঃ
আব্রাহাম লিঙ্কন জীবনে অসংখ্যবার ব্যবসা, রাজনীতি, এমনকি সংসারেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু একদিন তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলেন।
থমাস এডিসন হাজারবার ব্যর্থ হয়েও বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করেছিলেন। নিজেই বলেছিলেন—
“I have not failed. I’ve just found 10,000 ways that won’t work.”
হেলেন কেলার, যিনি দেখতে ও শুনতে পেতেন না, তিনিই হয়ে উঠেছিলেন বিশ্ববিখ্যাত বক্তা ও লেখক।
তাদের সবার মধ্যে মিল হলো—অজুহাত নয়, দৃঢ় সংকল্প ও চেষ্টা তাদের আলাদা করেছে।
সাফল্য ও ব্যর্থতার মনস্তত্ত্ব
১. Growth Mindset বনাম Fixed Mindset
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যারল ডুয়েক দেখিয়েছেন—
Fixed mindset এর মানুষ বিশ্বাস করে, দক্ষতা স্থির। ব্যর্থ হলে তারা অজুহাত দেয়: “আমি পারি না।”
Growth mindset এর মানুষ ভাবে, “আমি এখনো পারিনি, কিন্তু শিখতে পারব।” তাই তারা ব্যর্থতাকে শিক্ষা বানায়।
সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হলো growth mindset।
২. মস্তিষ্কের রসায়ন
ডোপামিন আমাদের অগ্রগতি ও অর্জনের অনুভূতিকে জাগায়। ছোট ছোট সাফল্য আমাদের আরও বড় প্রচেষ্টা করতে অনুপ্রাণিত করে।
ভয়ের হরমোন (কর্টিসল) আমাদের ব্যর্থতার আশঙ্কায় অজুহাত তৈরি করতে বাধ্য করে।
কিন্তু গবেষণা বলছে—যখন আমরা ভয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিই, তখন কর্টিসল কমে যায় এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
৩. আচরণবিজ্ঞান
মনোবিজ্ঞানী বি. এফ. স্কিনারের গবেষণা বলছে, মানুষ পুরস্কার পেলে আচরণ পুনরাবৃত্তি করে। তাই, যারা ছোট ছোট সাফল্য উদযাপন করে, তারা বড় সাফল্যের দিকে দ্রুত এগিয়ে যায়। অজুহাত খোঁজা মানেই ব্যর্থতার চক্রে আটকে থাকা।
গবেষণা-ভিত্তিক যুক্তি
📌 হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে—যেসব নেতারা অজুহাতের পরিবর্তে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তাদের টিম ৪৭% বেশি উৎপাদনশীল হয়।
📌 American Psychological Association এর রিপোর্ট বলছে—ব্যর্থতার পর যারা অজুহাত দেয়, তাদের মানসিক চাপ দ্বিগুণ বেড়ে যায় এবং পুনরায় চেষ্টা করার সম্ভাবনা অর্ধেকে নেমে আসে।
অর্থাৎ, অজুহাত শুধু সমাজের চোখে নয়, নিজের মনের ভেতরেও দুর্বলতা তৈরি করে।
বাস্তব জীবনের প্রেরণাদায়ক কাহিনি
স্টিভ জবস
অ্যাপল কোম্পানি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল স্টিভ জবসকে। তিনি চাইলে বলতে পারতেন—“আমি সুযোগ পাইনি।” কিন্তু তিনি Pixar এবং NeXT গড়ে তুললেন, যা পরে অ্যাপলকেই আরও শক্তিশালী করে তোলে।
ড. ইউনুস ও গ্রামীণ ব্যাংক
বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষকে কেউ ঋণ দেবে না—এমন ছিল প্রচলিত ধারণা। কিন্তু ড. ইউনুস কোনো অজুহাত না দিয়ে কাজ শুরু করলেন। ফলাফল—গ্রামীণ ব্যাংক আজ বিশ্বব্যাপী অনুকরণীয় মডেল।
আমরা কীভাবে জীবনে এই নীতি প্রয়োগ করব?
1. নিজেকে প্রশ্ন করুন: আমি কি সমাধান খুঁজছি নাকি অজুহাত তৈরি করছি?
2. ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন: প্রতিদিনের ছোট সাফল্য বড় স্বপ্নের পথে এগিয়ে দেয়।
3. ব্যর্থতাকে শিক্ষা বানান: প্রতিটি ব্যর্থতা হলো নতুন শেখার সুযোগ।
4. নিজেকে দায়িত্বশীল করুন: ব্যর্থ হলে নিজের ঘাটতিকে স্বীকার করুন।
5. অভ্যাস তৈরি করুন: প্রতিদিন ১% উন্নতির দিকে মনোযোগ দিন।
উপসংহার
সাফল্য প্রমাণের জন্য শব্দ চায় না, কাজই যথেষ্ট। আর ব্যর্থতা কোনো অজুহাত দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। তাই জীবন যখন আপনার সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়, তখন দুটি পথ খোলা থাকে—
অজুহাত দিয়ে পিছিয়ে পড়া,
অথবা দায়িত্ব নিয়ে নতুনভাবে উঠে দাঁড়ানো।
মনে রাখবেন—ইতিহাসে স্থান হয় তাদেরই, যারা অজুহাত ছেড়ে সাফল্যের মাধ্যমে নিজেদের প্রমাণ করেছেন।
Hobby, Hope, Dream, Goal—
আরও গভীরে Burning Desire ও Consuming Obsession: সাফল্যের নিউরোসাইকোলজিক্যাল রূপরেখা
মানুষের জীবনে চাওয়ার মাধ্যমেই শুধু সাফল্য আসে না। শখ, আশা, স্বপ্ন—এই শব্দগুলো আমাদের মানসিক জগতে আলোড়ন তোলে, কিন্তু এগুলোকে বাস্তবতায় রূপ দিতে হলে প্রয়োজন লক্ষ্য, বার্নিং ডিজায়ার, এবং কনজিউমিং অবসেশন।
এই ব্লগে আমরা দেখব কীভাবে এই ধারণাগুলো একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত, এবং কীভাবে মনোবিজ্ঞান ও নিউরোসায়েন্স আমাদের শেখায়—মানসিক শক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগালে জীবন বদলে যায়।
তিনটি মানসিক স্তর
শখ
শখ হলো আনন্দের জন্য করা কাজ। এতে আবেগ থাকে, কিন্তু দায়বদ্ধতা থাকে না। যেমন—ছবি আঁকা, গান শোনা, বাগান করা, প্রিয়জনের সাথে হাটা, বই পড়া (বই যখন দায়বদ্ধতার সাথে পড়া হয় তখন তা জীবন পরিবর্তনের সেতু হয়ে ওঠে)। শখ আমাদের মন ভালো রাখে, কিন্তু জীবন বদলায় না।
আশা
আশা হলো ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক প্রত্যাশা। আশা একটি ভাল দিক। যখন কারো মনের মধ্যে আশা থাকে না তখন তার ভিতরে হতাশা বসবাস করা শুরু করে। যখন একজন মানুষ হতাশার গভীরে প্রবেশ করে তখন সে আত্মহত্যা করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। আমরা আশা করি ভালো কিছু হবে, কিন্তু আশার পেছনে পরিকল্পনা বা পদক্ষেপ থাকে না। আশা আমাদের সাহস দেয়, কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছায় না।
স্বপ্ন
স্বপ্ন হলো আমাদের কল্পনার জগতে দেখা ভবিষ্যৎ। এটি আমাদের অনুপ্রাণিত করে, কিন্তু যদি শুধু স্বপ্নই থাকে—তবে তা কেবল কল্পনা হয়েই থেকে যায়।
স্বপ্নের কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্য নেই। স্বপ্নের নির্দিষ্ট কোন দিন বা তারিখ নেই। একে ওজন করা যায় না। পরিমাপও করা যায় না।
মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে Freud বলেন, স্বপ্ন আমাদের অবচেতন ইচ্ছার প্রতিফলন। কিন্তু Carl Jung-এর মতে, স্বপ্ন যদি সচেতনভাবে লালন না করা হয়, তবে তা কেবল কল্পনা হয়েই থাকে।
লক্ষ্য
লক্ষ্য হচ্ছে স্বপ্নের বাস্তব রূপ।
যখন স্বপ্নকে নির্দিষ্ট সময়সীমা, পরিকল্পনা, এবং পদক্ষেপে রূপান্তর করা হয়, তখন তা হয়ে ওঠে লক্ষ্য।
SMART Goal Framework অনুযায়ী, লক্ষ্য হতে হয়—নির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, প্রাসঙ্গিক (তবে অর্জনযোগ্য এবং প্রাসঙ্গিক এই দুটি সবসময় বাস্তবসম্মত নয়) এবং সময়সীমাবদ্ধ।
নিউরোসায়েন্স বলছে, লক্ষ্য নির্ধারণ করলে আমাদের মস্তিষ্কের prefrontal cortex সক্রিয় হয়—এটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিকল্পনা এবং মনোযোগ নিয়ন্ত্রণ করে। লক্ষ্য থাকলে মস্তিষ্ক "ডোপামিন" নিঃসরণ করে, যা আমাদের মোটিভেশন বাড়ায়।
বার্নিং ডিজায়ার
এটি হচ্ছে আবেগের জ্বালানি।
লক্ষ্য থাকলেই হবে না—লক্ষ্যের প্রতি থাকতে হবে জ্বলন্ত আকাঙ্ক্ষা।
Burning Desire মানে এমন এক তীব্র ইচ্ছা, যা শুধু চিন্তা নয়, বরং জীবনের চালিকাশক্তি। এটি আমাদের বাধা পেরোতে সাহায্য করে, ব্যর্থতা থেকে শিখতে শেখায়, এবং প্রতিদিনের ক্লান্তি জয় করতে শক্তি দেয়।
Victor Frankl বলেন, “He who has a why to live can bear almost any how.”
Burning desire আমাদের "why" তৈরি করে—যা জীবনের অর্থ দেয়।
নিউরোসায়েন্স অনুযায়ী, এই desire আমাদের limbic system-কে উত্তেজিত করে, যা আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের "fight or flight" প্রতিক্রিয়া সক্রিয় করে—যার ফলে আমরা সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারি।
কনজিউমিং অবসেশন
Consuming Obsession মনোযোগের চূড়ান্ত রূপ। যখন burning desire এতটাই গভীর হয় যে তা আমাদের প্রতিদিনের চিন্তা, আবেগ, এবং কর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে, তখন তা হয়ে ওঠে consuming obsession।
এটি আমাদের reticular activating system (RAS)-কে প্রভাবিত করে—RAS আমাদের মস্তিষ্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফিল্টার করে। যখন কোনো লক্ষ্য RAS-এর ফোকাসে থাকে, তখন আমরা সেই লক্ষ্য সম্পর্কিত তথ্য, সুযোগ, এবং পদক্ষেপ সহজেই খুঁজে পাই।
সাফল্যের সূত্র: তিনটি স্তম্ভ
১. স্বপ্নকে লক্ষ্য বানানো।
২. লক্ষ্যে বার্নিং ডিজায়ার যোগ করা।
৩. বার্নিং ডিজায়ারকে কনজিউমিং অবসেশন-এ রূপান্তর করা।
যদি এই তিনটি স্তম্ভ একসাথে থাকে তাহলে মানুষ যা চায়, তা-ই অর্জন করতে পারে।
কারণ তখন তার চিন্তা, কর্ম, এবং আবেগ—সবই একসাথে কাজ করে একটি উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্য।
Action Step (পাঠকের জন্য):
- আজই একটি স্বপ্ন লিখে ফেলুন।
- সেটিকে SMART Goal-এ রূপান্তর করুন।
- নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: “এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমি কতটা প্রস্তুত?”
- প্রতিদিন সকালে নিজেকে মনে করিয়ে দিন: “আমি এটা চাই, আমি এটা করব।”

Gratification
ভূমিকা
মানুষ সবসময় আনন্দ খোঁজে। ছোটবেলা থেকে আমরা শিখে আসি—কিছু পাওয়া মানেই আনন্দ, কোনো ইচ্ছা পূরণ হলেই সুখ। কিন্তু এই আনন্দের দুটি রূপ রয়েছে—একটি হলো তাৎক্ষণিক আনন্দ (Instant Gratification), আরেকটি হলো বিলম্বিত আনন্দ (Delayed Gratification)।
জীবনে সফলতা, শান্তি এবং স্থায়ী সুখ মূলত নির্ভর করে আমরা কোন ধরনের আনন্দ বেছে নেই। এই আর্টিকেলে আমরা Gratification সম্পর্কে বিস্তারিত জানব—এর সংজ্ঞা, ধরণ, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা, সামাজিক প্রভাব, এবং কীভাবে আমরা Delayed Gratification অভ্যাসে আনতে পারি।
Gratification কী?
Gratification শব্দটির অর্থ হলো তৃপ্তি, আনন্দ বা সন্তুষ্টি। যখন আমাদের কোনো ইচ্ছা পূর্ণ হয়, কোনো লক্ষ্য অর্জিত হয়, বা কোনো পুরস্কার মেলে, তখন মনের ভেতরে যে সুখ অনুভূত হয় সেটাই Gratification।
সহজভাবে বললে: কোনো কিছুর প্রতিদান বা ফলাফল পেয়ে মনের ভেতরে যে তৃপ্তি তৈরি হয়, সেটাই Gratification।
Gratification এর ধরণ
১. Instant Gratification (তাৎক্ষণিক তৃপ্তি)
এটি হলো এখনই সুখ চাই, এখনই আনন্দ চাই। অপেক্ষা করা যাবে না।
উদাহরণ:
ক্ষুধার্ত অবস্থায় জাঙ্ক ফুড খাওয়া, যদিও এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
পরীক্ষার পড়ার বদলে মোবাইল গেম খেলা।
টাকা হাতে পেলে সাথে সাথে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ফেলা।
এই ধরনের তৃপ্তি তাৎক্ষণিক আনন্দ দেয়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে অনেক সময় ক্ষতি ডেকে আনে।
২. Delayed Gratification (বিলম্বিত তৃপ্তি)
এটি হলো ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা, যাতে ভবিষ্যতে আরও বড় সুখ বা পুরস্কার পাওয়া যায়।
উদাহরণ:
এখন কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশোনা করা, ভবিষ্যতে ভালো ক্যারিয়ার পাওয়ার জন্য।
টাকা সঞ্চয় করা, যাতে পরে বড় বিনিয়োগ বা সম্পদ কেনা যায়।
নিয়মিত ব্যায়াম করা, যাতে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ ও সবল থাকা যায়।
যারা Delayed Gratification-এ পারদর্শী, তারা সাধারণত জীবনে বেশি সফল হয়।
Gratification এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
মস্তিষ্কের ভূমিকা
Limbic System (অ্যামিগডালা): মস্তিষ্কের এ অংশ আমাদের দ্রুত আনন্দ পেতে প্রলুব্ধ করে। তাই আমরা অনেক সময় অস্থির হয়ে তাৎক্ষণিক আনন্দ চাই।
Prefrontal Cortex: মস্তিষ্কের সামনের অংশ, যা যুক্তি, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও পরিকল্পনার কাজ করে। এটি আমাদের ভবিষ্যতের পুরস্কার কল্পনা করতে এবং অপেক্ষা করতে সাহায্য করে।
যাদের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স বেশি শক্তিশালী, তারা সহজে Delayed Gratification চর্চা করতে পারে।
হরমোন ও নিউরোট্রান্সমিটার
ডোপামিন (Dopamine): আনন্দ ও পুরস্কারের সাথে সম্পর্কিত। ছোট পুরস্কার পেলেই ডোপামিন বাড়ে → Instant Gratification।
সেরোটোনিন (Serotonin): দীর্ঘস্থায়ী সুখ ও মানসিক ভারসাম্য তৈরি করে → Delayed Gratification এর সাথে সম্পর্কিত।
কর্টিসল (Cortisol): স্ট্রেসের সময় আমরা অনেক সময় তাৎক্ষণিক আনন্দে ঝুঁকি, যাতে সাময়িক চাপ কমে।
শৈশব ও পরিবেশে Gratification এর বিকাশ
1. শৈশবের শিক্ষা:
যদি শিশু যা চায় তাই সাথে সাথে পায়, তাহলে সে Instant Gratification এ অভ্যস্ত হয়।
যদি তাকে ধৈর্য শিখানো হয়, তখন তার মধ্যে Delayed Gratification এর গুণ তৈরি হয়।
2. Stanford Marshmallow Experiment:
একদল শিশুকে একটি মার্শম্যালো দেওয়া হয়েছিল এবং বলা হয়েছিল, যদি তারা ১৫ মিনিট না খেয়ে অপেক্ষা করে, তবে দ্বিতীয় মার্শম্যালো পাবে।
যারা অপেক্ষা করতে পেরেছিল, তারা ভবিষ্যতে পড়াশোনা, সম্পর্ক, আর্থিক জীবন—সবক্ষেত্রে বেশি সফল হয়েছিল।
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব
ভোগবাদী সমাজ যেখানে বলা হয় “এখনই ভোগ করো, সুখ ভোগ করো” → সেখানে Instant Gratification বেশি দেখা যায়।
যেখানে দীর্ঘমেয়াদি পরিশ্রম, ধৈর্য এবং আত্মনিয়ন্ত্রণকে মূল্য দেওয়া হয় → সেখানে Delayed Gratification বেশি গড়ে ওঠে।
Instant Gratification এর প্রভাব
সুবিধা:
তাৎক্ষণিক আনন্দ ও চাপ কমানো।
সাময়িকভাবে আত্মতৃপ্তি দেওয়া।
অসুবিধা:
দীর্ঘমেয়াদে আফসোস ও ব্যর্থতার সম্ভাবনা বাড়ে।
স্বাস্থ্য, আর্থিক স্থিতি ও সম্পর্কের ক্ষতি করে।
আসক্তি (যেমন: সোশ্যাল মিডিয়া, গেম, জাঙ্ক ফুড) তৈরি করে।
Delayed Gratification এর প্রভাব
সুবিধা:
আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ধৈর্য তৈরি হয়।
দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য, আর্থিক স্বাধীনতা, স্থায়ী সুখ ও শান্তি আসে।
স্বাস্থ্য ভালো থাকে, সম্পর্ক উন্নত হয়।
চ্যালেঞ্জ:
অপেক্ষা করতে কষ্ট হয়।
ধৈর্য না থাকলে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কিভাবে Delayed Gratification অভ্যাস তৈরি করবেন?
1. ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
– বড় সাফল্যের পথে ছোট ছোট জয় আপনাকে ধৈর্যশীল হতে সাহায্য করবে।
2. ভবিষ্যতের সাফল্য কল্পনা করুন
– কেমন হবেন ৫ বছর পরে? এই কল্পনা আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে।
3. Self-control অনুশীলন করুন
– মোবাইল, খাবার বা ছোট ছোট প্রলোভন নিয়ন্ত্রণ করুন।
4. নিজেকে পুরস্কৃত করুন
– নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূর্ণ হলে নিজের জন্য পুরস্কার রাখুন।
5. ধ্যান ও সচেতনতা (Mindfulness) চর্চা করুন
– এটি মস্তিষ্ককে বর্তমান ও ভবিষ্যতের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে।
উপসংহার
Gratification আমাদের জীবনের প্রতিদিনের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। আমরা চাইলে তাৎক্ষণিক আনন্দে ডুবে থাকতে পারি, আবার ধৈর্য ধরে ভবিষ্যতের স্থায়ী সাফল্যও পেতে পারি।
👉 যারা Instant Gratification বেছে নেয়, তারা সাময়িক সুখ পেলেও অনেক সময় জীবনে পিছিয়ে যায়।
👉 আর যারা Delayed Gratification শিখে নেয়, তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে—পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, সম্পর্ক, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক স্থিতিতে—বেশি সফল হয়।
তাই আজ থেকেই নিজেকে প্রশ্ন করুন:
আমি কি ছোট আনন্দে থেমে যাচ্ছি?
নাকি বড় সাফল্যের জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছি?
🌟 সত্যিকার সাফল্য ও শান্তি আসে তখনই, যখন আমরা ধৈর্য শিখি এবং Delayed Gratification কে জীবনের অংশ করে তুলি।

জীবন একটা জার্নি, আপনি একজন পথিক, পৃথিবী আপনার যাত্রাপথ, মৃত্যুই আপনার গন্তব্য। আপনি, আমি কেউই এর বাইরে নই।
জীবন একটি অশেষ ভ্রমণ, আমরা প্রত্যেকেই এই ভ্রমণের একজন পথিক। পৃথিবী আমাদের যাত্রাপথ, আর মৃত্যু হলো সেই চূড়ান্ত গন্তব্য, যেখানে একদিন সবাইকে পৌঁছাতেই হবে। প্রশ্ন হলো—এই ভ্রমণের শেষে আমরা কী রেখে যাচ্ছি? মানুষের মনে ভালোবাসার স্মৃতি, নাকি ঘৃণার দাগ?
যাত্রার রূপক : আমরা সবাই পথিক
একজন পথিক যখন দীর্ঘ ভ্রমণে বের হয়, সে পথে নানা দৃশ্য, নানা মানুষ, নানা অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি, কখনো ঝড় তাকে কষ্ট দেয়; আবার কখনো ফুলের বাগান, নদীর স্রোত, কিংবা পাহাড়ের দৃশ্য তাকে আনন্দ দেয়।
জীবনের পথও এমনই—আনন্দ ও বেদনার মিশেল।
কিন্তু ভ্রমণের সৌন্দর্য নির্ভর করে কেবল দৃশ্যপটের উপর নয়, পথিকের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণের উপরও। কেউ ভ্রমণের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করে, মানুষের সাথে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করে; আবার কেউ অভিযোগ করে, রাগ করে, সম্পর্ক ভেঙে ফেলে।
মনস্তত্ত্বের দৃষ্টিতে যাত্রা
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, মানুষের মনে আপনি যা রেখে যান তা হলো আবেগ (emotion)।
কেউ যদি আপনাকে মনে রাখে, সে প্রায়শই আপনার কথার জন্য নয়, বরং আপনার কারণে তার যে অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য।
ইতিবাচক আচরণ মানুষের মস্তিষ্কে সুখানুভূতি তৈরি করে, যা অক্সিটোসিন ও ডোপামিন হরমোন নিঃসরণ করে—এগুলো সম্পর্ককে দৃঢ় করে।
নেতিবাচক আচরণ তৈরি করে ভয়, চাপ ও হতাশা, যা কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে দেয় এবং সম্পর্ককে বিষাক্ত করে।
অর্থাৎ, আপনার প্রতিটি কাজ, প্রতিটি কথা কারো না কারো মস্তিষ্কে স্থায়ী ছাপ ফেলে যাচ্ছে।
আচরণ : মানুষের হৃদয়ে অমর হওয়ার সিঁড়ি
কেউ মৃত্যুর পর কোটি টাকার সম্পদ রেখে যায়, কেউ রেখে যায় বিশাল ব্যবসা, কেউ খ্যাতি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এগুলো মিলিয়ে যায়।
যা চিরস্থায়ী থাকে তা হলো আপনার আচরণ এবং মানবিকতা।
নেলসন ম্যান্ডেলা ছিলেন একজন সাধারণ মানুষ, কিন্তু তাঁর ক্ষমাশীলতা ও মানবিকতার জন্য তাঁকে আজও কোটি মানুষ ভালোবাসে।
অন্যদিকে ইতিহাসে এমন শাসকের নামও আছে, যাদের নিষ্ঠুরতা আজও ঘৃণার প্রতীক।
আপনি কেমন আচরণ করছেন—তা-ই নির্ধারণ করবে আপনার নাম ভালোবাসার সাথে উচ্চারিত হবে, নাকি ঘৃণার সাথে।
যাত্রাকে অর্থবহ করার উপায়
১. সহানুভূতি (Empathy) গড়ে তুলুন :
আপনি যখন কাউকে সহানুভূতি দেখাচ্ছেন তখন তার চোখ দিয়ে পৃথিবীকে দেখুন আর তাঁর অনুভূতিকে নিজের মনে দেখুন। মানুষের কষ্ট বোঝার চেষ্টা করুন। এতে সম্পর্ক উষ্ণ হয়।
২. ইতিবাচক শক্তি ছড়ান :
প্রতিদিন কয়েকটি সুন্দর কথা কারো মন ভালো করে দিতে পারে। এটি ছোট কাজ মনে হলেও মানুষের মনে স্থায়ী ছাপ ফেলে।
৩. সততার পথে থাকুন :
মিথ্যা বা প্রতারণা সাময়িকভাবে সুবিধা দিলেও দীর্ঘমেয়াদে আপনার পদচিহ্ন মুছে দেয়। সত্য ও ন্যায় হলো অমরত্বের ভিত্তি।
৪. ক্ষমা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন :
বিদ্বেষ হৃদয়কে ভারী করে, কিন্তু ক্ষমা আপনার যাত্রাকে হালকা করে দেয় এবং অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করে।
৫. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন :
যাত্রার প্রতিটি ধাপ কৃতজ্ঞতার চোখে দেখলে আপনার মধ্যে সুখানুভূতি বাড়ে এবং অন্যরাও আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়।
৬. ভালোবাসার উত্তরাধিকার রেখে যান :
সন্তানের কাছে অর্থ বা সম্পদ রেখে যাওয়ার চেয়ে ভালোবাসা ও মানবিকতার শিক্ষা দেওয়া বেশি মূল্যবান।
একটি গল্প : দুই পথিকের শিক্ষা
দুইজন পথিক একসাথে দীর্ঘ যাত্রায় বের হলো।
প্রথমজন ছিল স্বার্থপর। সে পথে যাদের সাথে দেখা হয়েছে তাদের সাথে কঠোর আচরণ করেছে, শুধুমাত্র নিজের সুবিধার কথা ভেবেছে।
দ্বিতীয়জন ছিল সহানুভূতিশীল। সে পথের মানুষকে সাহায্য করেছে, সবার সাথে সুন্দর ব্যবহার করেছে।
যাত্রা শেষে যখন তারা গন্তব্যে পৌঁছলো, প্রথমজনকে কেউ মনে রাখেনি, বরং ভুলে যেতে চেয়েছে।
কিন্তু দ্বিতীয়জনের গল্প প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বলা হতে থাকলো—কারণ তার পদচিহ্ন ছিল ভালোবাসায় ভরা।
উপসংহার
জীবন এক মহাযাত্রা। মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী গন্তব্য, কিন্তু মৃত্যু কোনো শেষ নয়—বরং মানুষের মনে আপনার স্মৃতির শুরু। আপনার আচরণই নির্ধারণ করবে আপনি অমর হবেন ভালোবাসায়, নাকি ঘৃণায়।
তাই আসুন, আমরা এমনভাবে জীবন যাপন করি যাতে আমাদের পদচিহ্ন হয় সহানুভূতি, সততা, ভালোবাসা আর আলোয় ভরা। কারণ পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার পরও আমাদের যাত্রার গল্প বেঁচে থাকবে মানুষের মনে, হয় ঘৃণার অন্ধকারে নয়তো ভালোবাসার আলোয়।
আবার স্মরণ করুন
জীবন একটা জার্নি, আপনি একজন পথিক, পৃথিবী আপনার যাত্রাপথ, মৃত্যুই আপনার গন্তব্য।
আপনি, আমি কেউই এর বাইরে নই।

কখনও ভেবেছেন কি —আপনার জীবনে যত সমস্যাই আসুক না কেন, তার মূল কারণ প্রায় সময় একটাই বিষয়: আপনার মনের অবস্থা।
আপনার ভেতরের চিন্তা যদি শক্তিশালী হয়, তাহলে পাহাড়ও সরানো সম্ভব। আর যদি চিন্তা দুর্বল হয়, তবে ক্ষুদ্র একটি সমস্যাও আপনাকে ভেঙে দিতে পারে।
অর্থাৎ, জীবনের প্রতিটি সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করে আপনার মনকে কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন তার ওপর।
এখানেই আসে Mind Training—আপনার মনের শক্তিকে জাগ্রত করার এক অসাধারণ প্রক্রিয়া।
মনের শক্তি আসলে কত বড়?
আমাদের মস্তিষ্ক প্রতিদিন প্রায় ৬০,০০০ চিন্তা তৈরি করে। এর মধ্যে ৯৫% চিন্তাই গতকালের মতো একই ধরনের এবং অকাজের! যেগুলোকে বলা হয় নেগেটিভ চিন্তা।
ভাবুন তো—আপনি যদি প্রতিদিন একইভাবে চিন্তা করেন, তবে কি জীবনে নতুন কিছু আসবে?
একদমই না।
যেমন চিন্তা তেমন কাজ। নতুন চিন্তা করবেন নতুন কাজ করতে পারবেন।
Mind Training আপনাকে শেখায়—
✅ কীভাবে নতুন ধরণের চিন্তা তৈরি করবেন।
✅ কীভাবে ভেতরের শক্তিকে সক্রিয় করবেন।
✅ কীভাবে সীমাবদ্ধতা ভেঙে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলবেন।
এটা পড়ার মতো কোন রোমান্টিক উপন্যাস নয়, বরং বাস্তবে প্রয়োগযোগ্য একটি জীবনদর্শন।
কেন আমাদের Mind Training করা দরকার?
১. নেতিবাচক চিন্তা থেকে মুক্তি।
“আমি পারব না”, “আমার ভাগ্যে নেই”, “আমার সময় খারাপ”—এমন কথাগুলো কি আপনার মাথায় আসে?
এই নেতিবাচক চিন্তাগুলো আপনার শক্তি কেড়ে নিচ্ছে।
Brainy Institute এর ডিজাইনকৃত Mind Training সমূহ আপনাকে শেখাবে কিভাবে এই চিন্তাগুলোকে দূর করে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হয়।
২. জীবনের লক্ষ্য খুঁজে পাওয়া
অনেকেই দিন কাটাচ্ছেন কিন্তু জানেন না তিনি কোথায় যাচ্ছেন।
Brainy Institute এর ডিজাইনকৃত “ThinkNova : Life Transformational Human Brain Programming Session” - Mind Training শেখায় কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য স্পষ্ট করবেন এবং ধাপে ধাপে সেই লক্ষ্যে পৌঁছবেন।
৩. আত্মবিশ্বাস ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা
সুযোগ আসলেও আমরা ভয় পাই, ঝুঁকি নিতে চাই না, কিংবা দেরি করি। এর মূল কারণ হলো আত্মবিশ্বাসের অভাব।
Brainy Institute এর ডিজাইনকৃত “ThinkNova : Life Transformational Human Brain Programming Session” - Mind Training শেখায় কীভাবে ভেতরের ভয় ভেঙে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হয় এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
৪. মানসিক শান্তি ও সুখী জীবন
টাকা, কাজ, দায়িত্ব—সব আছে, তবুও কেন শান্তি নেই?
কারণ শান্তি আসে ভেতরের ভারসাম্য থেকে।
Brainy Institute এর ডিজাইনকৃত “Control Your Thoughts : Enjoy Your Inner Peace” - Mind Training শেখায় কিভাবে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং প্রতিদিনের জীবনে আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়।
৫. সম্পর্কের উন্নতি
মানুষ শুধু একা সফল হতে পারে না। পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী—সবাই মিলে একটি শক্তিশালী পরিবেশ তৈরি করে।
Brainy Institute এর ডিজাইনকৃত “ThinkNova : Life Transformational Human Brain Programming Session” - Mind Training
শেখায় কীভাবে যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ানো যায় এবং সম্পর্ককে আরও গভীর করা যায়।
কেন আপনাকে Mind Training-এ অংশগ্রহণ করা উচিত?
👉 আপনি যদি প্রতিদিন একই চিন্তায় আটকে যান।
👉 আপনি যদি লক্ষ্য ঠিক করেন কিন্তু মাঝপথে থেমে যান।
👉 আপনি যদি ভয়, হতাশা বা মানসিক চাপে ভুগে থাকেন।
👉 আপনি যদি নিজের ভেতরের লুকানো শক্তিকে জাগাতে চান।
👉 আপনি যদি সত্যিকারের সুখ, আত্মবিশ্বাস এবং সাফল্য পেতে চান।
তাহলে Brainy Institute কর্তৃক ডিজাইন কৃত Mind Training সমূহ এই আপনার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।
কল্পনা করুন…
এক বছর পরে আপনার জীবন কেমন হবে?
👉 যদি আপনার চিন্তা আরও শক্তিশালী হয়?
👉 যদি আপনি ভয়কে জয় করে নতুন কিছু শুরু করতে পারেন?
👉 যদি আপনার সম্পর্ক আরও সুন্দর হয়?
👉 যদি আপনি প্রতিদিন হাসিমুখে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে পারেন?
এই জীবনটা একদম অসম্ভব নয়। এটাই সম্ভব Brainy Institute কর্তৃক ডিজাইনকৃত Mind Training-এর মাধ্যমে।
শেষ কথা
আজকের দিনে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হলো নিজের মনের ওপর বিনিয়োগ।
যদি আপনি নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখতে পারেন, তাহলে জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রেই সফল হতে পারবেন—হোক সেটা শিক্ষা, ক্যারিয়ার, ব্যবসা বা ব্যক্তিগত জীবন।
মনে রাখবেন—আপনার মনের ভেতরেই লুকিয়ে আছে আপনার স্বপ্ন পূরণের সব চাবিকাঠি।
আর সেই চাবিটা খুঁজে বের করার নামই হলো Mind Training।
আজই সিদ্ধান্ত নিন।
নিজেকে বদলাতে হলে আগে মনকে বদলান।
আর মনকে বদলানোর সবচেয়ে কার্যকর পথ হলো Mind Training Programme।
কেন এখনই রেজিস্ট্রেশন করবেন?
👉 সময় নষ্ট করার মতো সুযোগ নেই – প্রতিদিন দেরি মানে আরও একদিন একই অবস্থায় আটকে থাকা।
👉 চাহিদা বেশি – সিট সীমিত, তাই আগে এলে আগে পাবেন।
👉 নিজের ওপর বিনিয়োগই সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ – টাকা খরচ করে হয়তো অনেক কিছু কিনেছেন, কিন্তু এবার সময় এসেছে নিজের মনের শক্তি কিনে নেওয়ার।
সিদ্ধান্ত আপনার হাতে
আপনি চাইলে আজও একই রকম জীবন কাটাতে পারেন—
👉 যেখানে ভয় আপনাকে আটকে রাখবে,
👉 লক্ষ্য থাকবে কিন্তু ফলাফল আসবে না,
👉 আর প্রতিদিন মনে হবে—“আমি পারতাম, কিন্তু…”।
অথবা—
আপনি আজই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নিজেকে বদলানোর জন্য।
একটি সঠিক সিদ্ধান্ত আপনার আগামী ১০ বছরের জীবনকে বদলে দিতে পারে।
মনে রাখুন:
আপনার জীবন বদলানোর ক্ষমতা আপনার হাতেই আছে।
এবং সেই পরিবর্তনের প্রথম ধাপ হলো— Brainy Institute কর্তৃক ডিজাইনকৃত Mind Training-সমূহে যোগ দেওয়া।

আপনি যখন ঘুমাচ্ছেন, তখন আপনার মস্তিষ্ক আপনার ভবিষ্যৎ গড়ে তুলছে
আমরা প্রতিদিন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই। সিদ্ধান্ত নিতে হয়, ভুল করি, শিখি, আবার শুরু করি। এভাবে মস্তিষ্ক একসময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
আমরা তখন ভাবি—আর কত?
এই ক্লান্তিকে দূর করতে, মনকে শুদ্ধ করতে এবং নিজেকে নতুন করে প্রস্তুত করতে যে শক্তি সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে, সেটি হলো "ঘুম"।
কিন্তু এটা শুধু শারীরিক বিশ্রাম নয়—এটি একটি মানসিক থেরাপি, একটি মস্তিষ্ক রিসেটিং সিস্টেম, যার মাধ্যমে আপনি নিজেকে প্রতিদিন একটু করে শক্তিশালী ও ফোকাসড মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন।
ঘুম : যখন আপনি থেমে যান, তখনই শুরু হয় ভেতরের কাজ
ঘুম শুধুই চোখ বন্ধ করে থাকা নয়। বিজ্ঞান বলছে—ঘুমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে:
দিনের স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা গুছিয়ে রাখে।
আবেগের ভারসাম্য বজায় রাখে।
শরীরের কোষগুলো রিপেয়ার করে।
কর্টিসল ও ডোপামিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
এবং সৃজনশীল চিন্তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে।
এক কথায়, আপনি যখন ঘুমান, তখন আপনার মস্তিষ্ক আপনার আগামী দিনের পথ তৈরি করে।
ঘুমের চক্র (Sleep Cycle) এবং কেন তা গুরুত্বপূর্ণ
ঘুমকে মূলত ৪টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়। প্রতিটি চক্র প্রায় ৯০ মিনিটের হয়, এবং রাতে সাধারণত ৪–৬টি চক্র সম্পূর্ণ হয়।
1. N1 (হালকা ঘুম): ঘুমের প্রথম ধাপ, যেখানে আপনি আধা-সচেতন অবস্থায় থাকেন।
2. N2 (মাঝারি ঘুম): শরীরের তাপমাত্রা, হার্টরেট ও নিঃশ্বাস ধীরে আসে।
3. N3 (গভীর ঘুম): শরীরের কোষ মেরামত হয়, হরমোন নিঃসরণ হয়।
4. REM (Rapid Eye Movement): এই পর্যায়ে আপনি স্বপ্ন দেখেন। মস্তিষ্ক তখন তথ্য সাজানো ও স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ করে।
যদি আপনি মাঝখান থেকে জেগে যান, তাহলে এই চক্র ভেঙে যায়, এবং আপনি ক্লান্ত, বিভ্রান্ত ও মানসিকভাবে দুর্বল অনুভব করতে পারেন।
ঘুমের আদর্শ সময়
ঘুমের মান নির্ভর করে “কতটুকু” ঘুমাচ্ছেন এবং “কখন” ঘুমাচ্ছেন—এই দুই বিষয়ের ওপর।
বয়স প্রতিদিনের আদর্শ ঘুম
শিশু (৩-৫ বছর) ১০–১৩ ঘণ্টা
স্কুলগামী (৬-১৩ বছর) ৯–১১ ঘণ্টা
টিনএজার (১৪-১৭ বছর)। ৮–১০ ঘণ্টা
প্রাপ্তবয়স্ক (১৮–৬৪ বছর) ৭–৯ ঘণ্টা
প্রবীণ (৬৫+ বছর) ৭–৮ ঘণ্টা
কখন ঘুমাতে যাবেন?
রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়া মস্তিষ্কের জন্য সবচেয়ে উপকারী, কারণ এই সময় সর্বোচ্চ মেলাটোনিন নিঃসরণ হয়—যা ঘুমকে গভীর করে এবং মানসিক চাপ কমায়।
যখন ঘুম হয় আত্মার আরাম
অনেকেই ঘুমাতে পারছেন না। দুশ্চিন্তা, স্মার্টফোনের আলো, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা—সব কিছু মিলিয়ে ঘুম যেন বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ ঘুমই হতে পারে আপনার দুঃখ ভুলে যাওয়ার সুযোগ, স্ট্রেস থেকে মুক্তি পাওয়ার রাস্তা, এবং আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার শক্তি।
প্রতিটি গভীর ঘুম মানে একরাশ বিষণ্নতা ধুয়ে ফেলা। প্রতিটি ভালো সকাল মানে নতুন করে শুরু করার অনুমতি।
মনস্তাত্ত্বিক ঘুম পাওয়ার সহজ উপায়:
১. ঘুমের সময় নির্ধারণ করুন: প্রতিদিন এক সময় ঘুমান ও জেগে উঠুন।
২. স্মার্টফোন দূরে রাখুন: ঘুমের অন্তত ১ ঘণ্টা আগে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন।
৩. বেডরুম হোক শান্তির ঘর: অন্ধকার, ঠান্ডা এবং শান্ত পরিবেশ ঘুম সহজ করে।
৪. মনকে পরিষ্কার করুন: ঘুমানোর আগে জার্নালিং বা অ্যাফার্মেশন করুন।
৫. চা/কফি এড়িয়ে চলুন: বিকেলের পর ক্যাফেইন গ্রহণ বন্ধ করুন।
৬. নিয়মিত মেডিটেশন করুন: ঘুমের আগে ৫ মিনিট ধ্যান মানসিক প্রশান্তি আনে।
সাফল্যের জন্য ঘুম একটি অপ্রকাশিত গোপন অস্ত্র
এলন মাস্ক দিনে ৬ ঘণ্টা ঘুমান, টিম কুক প্রতিদিন ভোর ৪টায় ওঠেন—কিন্তু তারা সকলেই মানেন, ঘুম Sacrifice নয়, বরং Preparation।
ঘুম বাদ দিয়ে সফল হতে চাওয়াটা হলো তৃষ্ণার্ত হয়ে পানির বোতল ফেলে দেওয়া।
আপনার ব্রেইন যদি ক্লান্ত থাকে, তাহলে আপনি কেবল বেঁচে থাকবেন—জীবন গড়তে পারবেন না।
শেষ কথায়...
ঘুমকে গুরুত্ব দিন। এটি অলসতা নয়, এটি শক্তি।
এটি বিলাসিতা নয়, এটি প্রয়োজন।
এটি সময়ের অপচয় নয়, এটি সাফল্যের বিনিয়োগ।
আপনার প্রতিটি দিন যেন একেকটি মাইলফলক হয়—তার জন্য প্রতিটি রাত হোক শান্ত, গভীর ও প্রস্তুতিমূলক।
আপনি কি আজ রাত থেকে নিজের মস্তিষ্ককে সত্যিকারের ঘুমের উপহার দেবেন?
ব্রেইনী ইনস্টিটিউটে আমরা শেখাই কীভাবে ঘুম, ফোকাস ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আপনি নিজেকে সেরা সংস্করণে রূপান্তর করতে পারেন। বিস্তারিত জানতে আজই যোগাযোগ করুন।

🌪️ যখন পুরো পৃথিবী আপনাকে থামাতে চায়, তখন কীভাবে নিজেকে চালিত রাখবেন?
একজন যাত্রাপথের মানুষের খোলা চিঠি...
আমি জানি, আপনি ক্লান্ত।
আমি জানি, আপনি অনেক চেষ্টা করেও অনেকবার হোঁচট খেয়েছেন।
আপনার পরিবার, আপনার বন্ধুরা, আপনার চারপাশের সমাজ এমনকি অনেক সময় আপনার নিজের মনও আপনাকে থামিয়ে দিতে চেয়েছে।
এই লেখাটা আমি কোনো জ্ঞান ফলাতে লিখছি না। বরং একজন সংগ্রামী মানুষ হিসেবে— যে নিজেও বহুবার ভেঙে পড়েছে, কিন্তু আবার দাঁড়িয়েছে। আমি শুধু আমার দেখা, শোনা আর ভেতরের যন্ত্রণার কথা শেয়ার করছি, যদি আপনি নিজেকে খানিকটা খুঁজে পান।
🧱সবাই কেন যেন আপনাকে থামিয়ে দিতে চায়?
একটা সময় আমি নিজেও বুঝতাম না— কেন আমি যখনই কিছু ভিন্ন করতে চাই, চারপাশের মানুষজন তা নিয়ে বিরক্ত হয়?
এখন বুঝি।
🔸 ১. আপনার স্বপ্ন অন্যদের ভয় দেখায়
সমাজের প্রায় সব মানুষ কষ্টে-চাপে মাথা নিচু করে বাঁচতে শেখে, সেই সমাজের চোখে একজন স্বপ্নবাজ যেন ‘বিপদ’। কারণ আপনি প্রশ্ন তোলেন—“জীবন কি শুধু এমন চলতে চলতে ফুরিয়ে যাওয়ার নাম?” আপনি ভাবেন ‘নতুন কিছু’, আর তাতেই অনেকে অস্বস্তিতে পড়ে যায়।
🔸 ২. তাদের ভালোবাসা আড়াল করে ভয়
অনেক সময় মা-বাবা, ভাই-বোন বা কাছের মানুষরাও আপনাকে নিরুৎসাহিত করে। আপনি ভেবে নেন, তারা আপনাকে বুঝছে না। কিন্তু গভীরে গেলে দেখবেন— তারা আসলে আপনাকে কষ্টে পড়তে দেখতে চায় না। তাদের চোখে নিরাপত্তা মানেই "চেনা পথ"। অচেনা পথ মানেই ভয়।
তাই তারা চায়, আপনি "সেই আগের মতোই" থাকুন।
🔸 ৩. তারা আপনাকে আপনার অতীত দিয়ে বিচার করে
যখন আপনি বড় কিছু ভাবেন, তারা ভাবে—“ও তো আগে একটা পরীক্ষায় ফেল করেছিল, ও কি পারবে?”
কিন্তু তারা বোঝে না, আপনি তখনকার আপনি নন। আমরা কেউই স্থির নয়— আমরা প্রতিদিন বদলাই, শিখি, বেড়ে উঠি।
💥 তাহলে কী করবেন? কিভাবে নিজেকে চালিত রাখবেন?
এই প্রশ্নটার উত্তর আমার নিজের জীবন থেকেই শিখেছি— অসংখ্যবার হেরে গিয়ে, অপমানিত হয়ে, রাতজেগে কান্না করে, আবার নতুন সকাল দেখে।
✅ ১. নিজের কাছে একবার সত্য করে বলুন — আপনি কী চান?
একদিন রাতে আমি নিজেকে জিজ্ঞেস করেছিলাম —
“যদি আজই আমার জীবনের শেষ দিন হতো, তাহলে কি আমি সন্তুষ্ট থাকতাম?”
উত্তর ছিল “না”।
সেদিন আমি সিদ্ধান্ত নিই, আমি আমার স্বপ্নকে সময় দেব। অন্য কেউ কী ভাবছে, সেটা নয়। আমি কী চাই — সেটাই আমার জীবনের মূল কথা হবে।
আপনার WHY যদি স্পষ্ট হয়, বাইরের কোনো শব্দই আপনাকে থামাতে পারবে না।
✅ ২. নিজেকে একা সময় দিন — ‘নয়েজ’ বন্ধ করুন
আপনার মস্তিষ্ক প্রতিদিন হাজার হাজার আওয়াজ শোনে — "ও পারবে না", "তুই কারো মতো হতে পারবি না", "সমাজ কী বলবে?"
এগুলো ‘শব্দ’, সত্য নয়। একা সময় কাটান, প্রকৃতির মাঝে হাঁটুন, নিজের মনকে শোনার অভ্যাস করুন। দেখবেন, সেখানে একটা কণ্ঠস্বর বলছে—
“তুমি পারো। তুমি আগেও পেরেছো।”
✅ ৩. প্রত্যাখ্যানকে প্রেরণায় রূপান্তর করুন
প্রত্যাখ্যান একটা গিফট, শুধু তার মোড়কটা তিক্ত।
আমার জীবনে যাদের কাছ থেকে ভালোবাসা পাই নি, বা যারা বলেছে, “তুমি কিছুই করতে পারবে না”— তাদের কথাগুলোকেই আমি শক্তি বানিয়েছি।
তাদের একেকটা 'না' আমাকে একেকটা সিঁড়ি দিয়েছে।
যে যত বেশি না শুনেছে, সে তত বেশি হ্যাঁ পাওয়ার উপযুক্ত হয়ে উঠেছে।
✅ ৪. বারবার শুরু করুন, তবুও থেমে যাবেন না
যতবার আপনি পড়ে যাবেন, ঠিক ততবারই নিজেকে তুলুন।
এটা শুনতে সহজ, কিন্তু করতে কঠিন — আমি জানি।
তবুও, আমি বলব— আপনি থেমে যাবেন না। কারণ আপনি জানেন, আপনার স্বপ্ন কেউ আপনাকে দান করে দেয় নি — আপনি নিজেই সেটা জন্ম দিয়েছেন।
🌱 আমি জানি, আপনি পারবেন
এই লেখাটি আমি আপনার জন্য রেখে গেলাম, যিনি হয়তো আজ খুব কঠিন সময় পার করছেন।
আপনি হয়তো হতাশ, একা, বিভ্রান্ত।
কিন্তু আমি বিশ্বাস করি— আপনার ভেতরে এমন একটি আলো আছে, যেটা এখনো পৃথিবী দেখেনি।
আপনি হেঁটে চলুন, ধীরে হলেও, একদিন ঠিক পৌঁছাবেন।
যেদিন পৌঁছাবেন, সেদিন এই পৃথিবী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করবে—
"এই তুমি? তুমি তো…!"
আর আপনি মুচকি হেসে বলবেন—
"হ্যাঁ, আমি। আমি থামিনি বলেই পেরেছি।"
👉 আপনি যদি মনে করেন এই লেখাটি আপনার ভেতরে কিছুটা নাড়া দিয়েছে, তাহলে আমাদের লাইভ মাইন্ড ট্রেনিং সেশনে যুক্ত হতে পারেন। এটি কোনো যাদু নয়— বরং আপনার নিজের শক্তিকে জাগিয়ে তোলার এক বাস্তব প্রক্রিয়া।
👉 "নিজেকে বদলাতে আজই রেজিস্ট্রেশন করুন।”
🖊️
Abu Taher
The Thought Changer
Mind Trainer, Author, Teacher

(একটা 'না' থেকে শুরু হতে পারে আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় 'হ্যাঁ')
🌍বর্তমান সময়ে 'না' কতটা স্বাভাবিক?
আজকের পৃথিবীটা আগের থেকে অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক।
তুমি যদি স্কুল-কলেজে ভালো রেজাল্ট করতে না পারো, কেউ বলে— "তোমার দ্বারা কিছু হবে না।"
তুমি যদি চাকরির ইন্টারভিউতে টিকতে না পারো, কেউ বলে— "তুমি ফেলিওর।"
তুমি যদি নতুন কোনো উদ্যোগ নিতে চাও, পরিবার বা সমাজ বলে— "পাগলামি কোরো না!"
তুমি যদি একটু ভিন্নভাবে ভাবো, অনেকে বলে— "তুমি অদ্ভুত!"
এটাই বাস্তবতা।
তবে এই 'না' গুলোকে যদি তুমি ঠিকভাবে নিতে শেখো, তাহলে এটাই হবে তোমার জয়ের শুরু।
🌱 টমাস আলভা এডিসনের চোখ ভেজা গল্প
টমাস আলভা এডিসনের ছোটবেলায় শিক্ষকরা তাকে 'বোকা' বলেছিলেন। একদিন স্কুল থেকে তার হাতে চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হয়—মায়ের জন্য।
এডিসন চিঠি খুলে পড়তে বললে, তার মা চোখের পানি আটকাতে পারলেন না।
তিনি পড়ে শোনালেন—
"আপনার ছেলে অসাধারণ মেধাবী। আমাদের স্কুল তার মান অনুযায়ী নয়। আপনি নিজেই তাকে ঘরে পড়ান।"
এরপর মা নিজ হাতে পড়াতে লাগলেন ছেলেকে, বিশ্বাস দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুললেন তাকে।
বছর পেরিয়ে গেল।
অনেক বছর পর, যখন মা আর নেই, এডিসন সেই চিঠিটি খুঁজে পেলেন পুরনো কাগজপত্রে।
সেখানে লেখা ছিল—
"আপনার ছেলে মানসিকভাবে অক্ষম। আমাদের স্কুলে তার পড়া চালানো সম্ভব নয়। আমরা তাকে বহিষ্কার করছি।"
চোখে জল নিয়ে এডিসন বললেন—
"একজন অসাধারণ মায়ের কারণে একজন ‘বোকা’ ছেলে হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর অন্যতম সেরা আবিষ্কারক।"
🧠 কে আপনাকে 'না' বলেছে?
আপনার শিক্ষক?
আপনার বন্ধু?
আপনার পরিবার?
আপনার সমাজ?
না কি আপনি নিজেই?
আমরা প্রতিনিয়ত বাইরের ‘না’-র চেয়ে নিজের ভিতরের ‘না’-এর কারণে বেশি থেমে যাই।
আপনি যদি নিজেই নিজেকে বলেন—"আমার দ্বারা হবে না", তাহলে কেউ চাইলেও আপনাকে জেতাতে পারবে না।
কিন্তু আপনি যদি নিজেকে বলেন—"সবাই না বললেও, আমি বিশ্বাস করি আমি পারব", তখন জগৎও পথ করে দেয়।
🚶♂️ আজকের বাস্তবতা ও আমাদের মানসিক চাপ
আজকাল একটা ছাত্র যদি রেজাল্টে ভালো না করে, আত্মহত্যার কথা ভাবে।
একজন তরুণ উদ্যোক্তা যদি প্রথম প্রজেক্টে ব্যর্থ হয়, হতাশায় ডুবে যায়।
একজন মেয়ে যদি তার নিজের স্বপ্নের জন্য লড়াই করে, সমাজ তাকে 'অপরিণত' বলে।
এই 'না' গুলো মানুষকে ভেঙে ফেলে…
...কিন্তু এটাই সেই সময়, যখন নিজেকে বলতে হয়—
"সবাই না বললেও আমি নিজের মধ্যে হ্যাঁ খুঁজে পাব।"
✨ নিজের মধ্যে 'হ্যাঁ' খুঁজে পাওয়ার ৭টি উপায়:
১. নিজের অর্জনগুলো লিখে রাখুন – ছোট হলেও এগুলো আপনাকে মনে করিয়ে দেবে আপনি পারতেন।
২. নিজেকে প্রতিদিন একবার আয়নায় দাঁড়িয়ে সাহস দিন – “তুমি পারবে, তুমি পারছো।”
৩. নেতিবাচক লোকজন থেকে দূরে থাকুন – যারা শুধু 'না' বলে, তাদের সীমাবদ্ধতা আপনার ঘাড়ে নেবেন না।
৪. ব্যর্থতা মানেই নতুন শিক্ষন– ফেইল মানে First Attempt In Learning।
৫. নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী ছোট কাজ শুরু করুন – নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিন।
৬. সফল মানুষদের জীবনী পড়ুন – যেমন এডিসন, কলোনেল স্যান্ডার্স, ওপেরা উইনফ্রে ইত্যাদি।
৭. নিজের ভেতরে বিশ্বাস তৈরি করুন – প্রত্যেক দিন অন্তত ৫ মিনিট নিজেকে সময় দিন।
💬 বাস্তব জীবনের কথোপকথন
🔹 বাবা: "তুমি শুধু সময় নষ্ট করছো। তোমার পড়াশোনা কিছুই হচ্ছে না।"
🔹 ছেলে: (চোখ নামিয়ে) "হয়তো এখন না, কিন্তু আমি চেষ্টা করছি। একদিন দেখাবো, পারি।"
এই ‘চেষ্টা’টাই সবকিছু বদলে দিতে পারে।
❤️ শেষ কথা:
জীবনে আপনি অনেক 'না' শুনবেন। হয়তো আজও শুনছেন।
কিন্তু নিজের মধ্যে যদি আপনি একটা জোরে 'হ্যাঁ' বলতে পারেন, তাহলে এই দুনিয়ার কোন শক্তিই আপনাকে থামাতে পারবে না।
"একটা না, একটা গেট। আর একটা হ্যাঁ, একটা সিঁড়ি। আপনি কোনটা বেছে নেবেন?"
🔔 এক মিনিট থামুন এবং ভাবুন...
কে আপনাকে শেষবার ‘না’ বলেছে?
আপনি সেই ‘না’ শুনে থেমে গেছেন, না এগিয়ে গেছেন?
আজকের দিনেই সিদ্ধান্ত নিন—
👉 "আমি থামবো না। আমি হ্যাঁ-কে খুঁজবো।"
✅ এই আর্টিকেলটি আপনার পরিচিত এমন কাউকে শেয়ার করুন, যাকে সবাই 'না' বলেছে। হতে পারে আপনি তার জীবনের সবচেয়ে বড় 'হ্যাঁ' হয়ে উঠবেন।
Abu Taher,
The Thought Changer
Mind Trainer, Author, Teacher

আপনি জীবনে কতবার ব্যর্থ হয়েছেন?
একবার? পাঁচবার? দশবার?
নাকি এতবার হেরেছেন যে গুনতেই ভুলে গেছেন?
তাহলে অভিনন্দন।
কারণ এই ব্যর্থতাগুলোই প্রমাণ করে আপনি চেষ্টার পথে ছিলেন। আপনি হাত গুটিয়ে বসে থাকেন নি। আপনি সাহস করে উঠেছিলেন, চেষ্টা করেছিলেন, হোঁচট খেয়েছিলেন, আবারও উঠে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
🎯 ব্যর্থতা মানেই কি আপনি অযোগ্য?
না। ব্যর্থতা কখনোই কারও যোগ্যতা মাপার মানদণ্ড হতে পারে না।
প্রকৃতপক্ষে, যারা জীবনে বড় কিছু করেছেন, তারা কেউই একবারে সফল হন নি।
তারা হেরেছেন। ভেঙে গিয়েছেন। কখনো অর্থে, কখনো সম্মানে, কখনো আত্মবিশ্বাসে। কিন্তু তারা থেমে থাকেন নি।
উইনস্টন চার্চিল বলেছিলেন –
"Success is not final, failure is not fatal: it is the courage to continue that counts."
🌱 ব্যর্থতার মধ্যেই সাফল্যের বীজ লুকিয়ে থাকে
একটি বীজ যেমন অন্ধকার মাটির নিচে গিয়ে, চাপ খেয়ে, ভেঙে গিয়ে তবেই গাছ হয়ে ওঠে,
তেমনই, মানুষকে অনেক সময় চেপে ধরা ব্যর্থতাই আসল সাফল্যের জন্ম দেয়।
কখনো আপনি চাকরি পান নি, হয়তো তার কারণ আপনি আরও বড় কিছু করতে জন্মেছেন।
আপনার প্রেমে ভাঙন এসেছে? হয়তো আপনি নিজেকে ভালোবাসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ব্যবসা ক্ষতিতে গেছে? হতে পারে নতুন একটি ধারণা আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেবে।
🧠 ব্যর্থতার মানেই মস্তিষ্কের নতুন শক্তি সক্রিয় হয়
নিউরোসায়েন্স বলে, আমরা যখন ব্যর্থ হই, তখন মস্তিষ্কের নতুন সংযোগ তৈরি হয়—Neuroplasticity।
এমন একটি শক্তি, যা ব্যর্থতা থেকে শেখার মাধ্যমে আমাদের চিন্তাকে আরও তীক্ষ্ণ ও পরিপক্ব করে তোলে।
অর্থাৎ, ব্যর্থতা মানে আপনি ধ্বংস হচ্ছেন না, বরং আপনি গড়ে উঠছেন—একটি নতুন রূপে, একটি নতুন শক্তিতে।
💡 নিজেকে একটা প্রশ্ন করুন...
আপনি যদি কখনো ব্যর্থ না হতেন, তাহলে কি আপনি নিজেকে এতটা জানতে পারতেন?
আপনি কি আজ এতটা অনুভব করতে পারতেন—কার কষ্ট সত্যি, কে হাসিমুখের আড়ালে কান্না লুকিয়ে রাখে?
ব্যর্থতা আমাদের ভিতরে সহানুভূতি, মানবতা এবং আত্মচেতনা গড়ে তোলে।
এটা আমাদের শুধু শক্তিশালী নয়, আরও ভালো ও দক্ষ মানুষ করে গড়ে তোলে।
✅ আপনি ব্যর্থ নন, আপনি প্রস্তুত হচ্ছেন
আপনি জীবনে যতবার ব্যর্থ হয়েছেন, তা আসলে ছিল আপনার বড় হওয়ার প্রস্তুতি।
এই ব্যর্থতাগুলোর জন্য আপনি কৃতজ্ঞ হোন।
সেগুলোই আপনাকে সত্যিকারের মানুষ বানিয়েছে।
সেগুলোই আজ আপনাকে অন্যের অনুপ্রেরণার উৎস করে তুলতে পারে।
🔔 ব্রেইনী ইনস্টিটিউট-এ আমরা বিশ্বাস করি—যে চিন্তা বদলাতে পারে, সেই জীবন বদলাতে পারে।
ব্যর্থতা নিয়ে লজ্জিত নয়, বরং গর্বিত হোন। কারণ আপনি থেমে থাকেন নি। আপনি এখনো আছেন, এখনো লড়ছেন। এবং আপনিই পারবেন।
আপনি যখন হার মানেন, তখন আপনার সম্ভাবনার মাত্র ১০ ভাগই শেষ হয়। কিন্তু যখন আপনি হাল ছেড়ে দেন, তখন বাকি ৯০ ভাগ নিজেই মুছে ফেলেন।
📢 আপনি যদি নিজের চিন্তাকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে চান, নিজের ব্যর্থতাকে শক্তিতে রূপান্তর করতে চান—তাহলে আমাদের সাথে যুক্ত হন। আমরা আছি আপনার পাশে।
🧠 Brainy Institute — Design your thought process
Writer
Abu Taher, The Thought Changer
Mind Trainer, Writer, Teacher

এই পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ কিছু না কিছু চায়—কেউ ধনী হতে চায়, কেউ সুখী, আবার কেউ খ্যাতি, সম্মান ও স্বাধীনতার স্বাদ পেতে চায়। কিন্তু খুব কম মানুষই বোঝে, আমাদের জীবনের এই চাওয়া-পাওয়া, উন্নতি কিংবা পিছিয়ে পড়া—সবই নির্ভর করে একটি গভীর ও অদৃশ্য শক্তির ওপর। আর সেই শক্তি হচ্ছে—চিন্তা।
🧠 তোমার আজকের জীবন, তোমার গতকালের চিন্তার ফল।
আপনার বর্তমান অবস্থান—আপনার চিন্তারই ফসল। জীবন কোনো এলোমেলো ঘটনা নয়। এটি একটি ধারাবাহিক রূপান্তরের প্রক্রিয়া, যেখানে প্রতিটি চিন্তা এক একটি বীজ এবং আপনার বাস্তবতাই তার ফলন।
আপনি যেমন ভাবেন, আপনি তেমনই হয়ে ওঠেন। আপনি যদি ভাবেন আপনি দুর্বল, তাহলে আপনার কাজও দুর্বল হবে। আপনি যদি ভাবেন আপনি অযোগ্য, তবে সুযোগগুলো আপনাকে এড়িয়ে যাবে।
অন্যদিকে, আপনি যদি বিশ্বাস করেন আপনি মূল্যবান, আপনি সক্ষম—তবে আপনি এমন কিছু করবেন, যা আপনার জীবনের গতিপথই পাল্টে দেবে।
🌍দুটি জগৎ, একটি নিয়ন্ত্রণ
আমরা সবাই বাস করি দুইটি জগতে—
1. বাহ্যিক জগৎ: যেখানে আছে চাকরি, পরিবার, অর্থনীতি, সমাজ, প্রযুক্তি, প্রতিযোগিতা।
2. অন্তর্জগৎ: যেখানে আছে চিন্তা, বিশ্বাস, আত্ম-মূল্যায়ন, কল্পনা ও মনোভাব।
প্রকৃতপক্ষে, বাহ্যিক জগত আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে না, বরং আমাদের অন্তর্জগত-ই ঠিক করে দেয় আমাদের বাহ্যিক পরিস্থিতি কেমন হবে। আপনি যদি অন্তরে নিজেকে সফল কল্পনা করতে না পারেন, তবে বাহিরে সেটি বাস্তবে রূপ নেবে না।
🌱 চিন্তার বীজেই ভাগ্যের শুরু
চিন্তা কখনোই শুধু ভাবনা নয়, বরং এটি আপনার ভবিষ্যতের ডিজাইন প্ল্যান।
যেমন একজন কৃষক বীজ বপন করে ফলনের আশা করে, তেমনি একজন ব্যক্তি যখন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে সাহসী ও ইতিবাচক চিন্তা করেন, তখনই তার ভিতরে একটি নতুন ভাগ্যের বীজ রোপণ হয়।
“আমি পারি”, “আমি শিখতে পারি”, “আমি তৈরি হব”—এইসব বাক্য শুধু বাক্য নয়, এগুলো হলো জীবনের চালকের আসনে বসার মনোভাব।
🚫 মানসিক দারিদ্রতাই সবচেয়ে বড় বাধা
অনেক মানুষ ভাবে—“আমার টাকা নেই”, “পরিবার সাপোর্ট করে না”, “আমি সুযোগ পাই না”—এইসব কথা যেন তাদের উন্নতির অন্তরায়।
আসলে এসব বাহ্যিক সমস্যা নয়, এগুলো হলো মনের ভিতরের দরিদ্রতা। অর্থের অভাব আপনাকে থামায় না যতটা থামায় আত্মবিশ্বাসের অভাব।
একজন গরিব কিন্তু সাহসী মানুষ একদিন সফল হতে পারে। কিন্তু একজন মানসিকভাবে দরিদ্র মানুষ চিরকাল নিজের সীমাবদ্ধতার ভেতরেই আটকে থাকে।
🔥 পরিবর্তন এনেছেন যারা, তাদের প্রথম সম্পদ ছিল সাহসী চিন্তা
বিশ্বের সফল ব্যক্তিরা—বিল গেটস, স্টিভ জবস, কিংবা আমাদের দেশের বহু উদ্যোক্তা—তারা কেউই বিশাল সম্পদ নিয়ে শুরু করেননি।
তাদের ছিল শুধু একটাই শক্তি—চিন্তার সাহস।
তারা নিজের ওপর বিশ্বাস রেখেছিলেন, তারা ভেবেছিলেন, “আমি পারব, আমি গড়ব”—এবং সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল তাদের যাত্রা।
আপনিও যদি আজ থেকে নিজের চিন্তাধারাকে বদলে ফেলেন, তবে আপনার জীবনও বদলাতে বাধ্য।
🛑ভাগ্য বদলাতে চাইলে আগে চিন্তা বদলান
“ভাগ্য” কোনো রহস্যময় কিছু নয়। এটি হল আপনার চিন্তা, বিশ্বাস ও সিদ্ধান্তের সমষ্টি।
চিন্তা বদলানো মানে শুধুই পজিটিভ ভাবা নয়।
এটা মানে:
নিজেকে সীমাহীনভাবে কল্পনা করা
নিজের সম্ভাবনাকে বিশ্বাস করা
জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেওয়া
যদি আপনি নিজের জীবনের স্টিয়ারিং অন্য কারো হাতে দিয়ে দেন—তবে আপনি আর “নির্মাতা” নন, আপনি একজন “অনুগামী”।
🕊️ স্বাধীনতা মানে নিজের সিদ্ধান্তে পথ চলা
প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় আমাদের শেখানো হয়—ভালো রেজাল্ট করো, চাকরি পাবে। অথচ কেউ শেখায় না—নিজে কিছু তৈরি করো, নেতৃত্ব দাও।
একজন চাকরিজীবী হয়তো নিরাপত্তা পায়, কিন্তু তার ছুটি, ইনক্রিমেন্ট, এমনকি ভবিষ্যতও অন্য কেউ ঠিক করে দেয়।
অন্যদিকে, একজন উদ্যোক্তা নিজেই তার সময়, আয় এবং শেখার গতি নির্ধারণ করে। সে জানে, লাভ-ক্ষতি তার নিজেরই হবে। তাই তার কষ্টের প্রতিটি বিন্দু একদিন ফলে রূপান্তরিত হয়।
🪜 ব্রেইনী ইনস্টিটিউট: তোমার চিন্তার সিঁড়ি
যদি তুমি বিশ্বাস করো—
“আমি শুধু বেঁচে থাকার জন্য আসিনি, আমি কিছু গড়ে তোলার জন্য এসেছি”—
তবে ব্রেইনী ইনস্টিটিউট এর প্রতিটি ট্রেনিং সেশন তোমার জন্য একটি চিন্তার সিঁড়ি হবে।
তুমি যত ওপরে উঠবে, ততই পরিষ্কার হবে—ভাগ্য কোনো বাহ্যিক ছায়া নয়, এটা তোমার মনের প্রতিফলন।
🔑 শেষ কথা: তুমি নিয়তির পুতুল নও
জীবন তোমার নিজের হাতে।
তুমি চাইলে তোমার চিন্তা বদলাতে পারো।
চিন্তা বদলালে—দৃষ্টি বদলাবে।
দৃষ্টি বদলালে—আচরণ বদলাবে।
আচরণ বদলালে—পরিণতি বদলাবে।
আর এভাবেই ভাগ্যও বদলে যাবে।
✅ যদি তুমি বিশ্বাস করো—“আমার ভবিষ্যৎ আমার মস্তিষ্কেই লুকিয়ে আছে”,
তবে আজ থেকেই শুরু হোক নতুন যাত্রা—চিন্তার জগত পুনর্গঠনের মাধ্যমে।
Writer
Abu Taher, The Thought Changer
Mind Trainer, Writer, Teacher

আমরা জন্মের পর থেকেই “স্বাধীনতা” শব্দটি শুনে আসছি।
২৬ মার্চে পতাকা ওড়ে, ১৬ ডিসেম্বরে রক্তে রাঙা ইতিহাসের কথা মনে করি—গাই, “এক সাগর রক্তের বিনিময়ে…”
কিন্তু একটা প্রশ্ন কি কখনও নিজেকে করেছি?
আমি কি সত্যিই স্বাধীন?
আমার সময়, সিদ্ধান্ত, স্বপ্ন—এসবের নিয়ন্ত্রণ কি আসলেই আমার হাতে?
নাকি প্রতিদিন আমি একটা অদৃশ্য নিয়মের জালে আটকে আছি, যেটা অন্য কেউ তৈরি করে দিয়েছে?
🎯 স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ কী?
স্বাধীনতা মানে শুধু কোনো ভূখণ্ডে পতাকা ওড়ানো নয়,
স্বাধীনতা মানে—নিজের জীবনের কর্তৃত্ব নিজের হাতে নেওয়া।
একজন ব্যক্তি তখনই সত্যিকার অর্থে স্বাধীন,
যখন সে তার চিন্তা, সিদ্ধান্ত ও কর্মপদ্ধতি নিজেই নির্ধারণ করতে পারে।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমাদের অধিকাংশ মানুষ এক ভিন্ন রকম বন্দীত্বে বাস করছে—যার শিকল চোখে দেখা যায় না, কিন্তু অনুভব করা যায় প্রতিটি নিঃশ্বাসে।
🏠পারিবারিক পরাধীনতা
অনেকেই জন্ম থেকেই পারিবারিক চাপে সিদ্ধান্ত নিতে শেখে না।
কি পড়বে, কাকে বিয়ে করবে, কোথায় চাকরি করবে—এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পরিবার ঠিক করে দেয়।
স্বপ্ন দেখার আগেই বলা হয়,
“ওসব দিয়ে কিছু হবে না, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হও।”
এই বাধ্যবাধকতার ভেতর বড় হয়ে ওঠা একজন তরুণের পক্ষে নিজের জীবনযাত্রা গড়ে তোলা সম্ভব হয় না।
সে শিখে—অন্যের ইচ্ছা পূরণ করাই তার দায়িত্ব।
🏛️রাষ্ট্রীয় কাঠামোর শৃঙ্খলে জনগণ
বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হলেও, নাগরিকরা কতটা স্বাধীন?
সঠিক শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকলে,
বিচার বিভাগে দেরি ও পক্ষপাতিত্ব থাকলে,
প্রশাসনিক দুর্নীতি প্রতিদিনের বাস্তবতা হলে,
একটিমাত্র সরকারি ফর্ম পূরণের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হলে—
তখন কি সত্যিই আমরা স্বাধীন নাগরিক?
রাষ্ট্র যদি নাগরিককে চিন্তা করতে শেখায় না, বরং নিয়ন্ত্রণ করতে চায়—তাহলে সেই স্বাধীনতা কেবল কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ।
💰অর্থনৈতিক পরাধীনতা
একজন মানুষ তখনই সত্যিকারভাবে স্বাধীন হতে পারে,
যখন সে নিজের উপার্জন নিজে করতে পারে,
নিজের চাহিদা অনুযায়ী ব্যয় করতে পারে,
নির্ভর করতে হয় না ঋণের ওপর, অনুদানের ওপর বা অন্য কারও দয়ায় বাঁচতে।
কিন্তু আমরা দেখি,
একজন শিক্ষিত যুবক ৮ বছর পড়াশোনার পরও চাকরি খুঁজে বেড়ায়,
একজন গৃহবধূ স্বামীর অর্থের জন্য নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দেয়,
একজন শ্রমিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমায় মাত্র কিছু টাকা আয়ের আশায়।
এই আর্থিক নির্ভরতা মানুষের চিন্তা, সিদ্ধান্ত, এমনকি আত্মসম্মান পর্যন্ত কেড়ে নেয়।
🧠চিন্তার পরাধীনতা: সবচেয়ে গভীর দাসত্ব
আমরা হয়তো স্বাধীনভাবে হাঁটি, কথা বলি, বাজার করি—
কিন্তু কীভাবে ভাবি, তা কি স্বাধীনভাবে করতে পারি?
আজ আমাদের চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণ করে:
সামাজিক মিডিয়া
বিজ্ঞাপন
রাজনৈতিক প্রচারণা
ধর্মীয় কুসংস্কার
শিক্ষার ভ্রান্ত পদ্ধতি
আমরা যা পড়ি, শুনি, বিশ্বাস করি—তা আমাদের শেখানো হয়েছে, যাচাই না করেই।
আমাদের চিন্তার স্বাধীনতা এতটাই সীমাবদ্ধ যে নিজের পছন্দে সিদ্ধান্ত নিলেও সেটা আসলে অনেক সময় অন্যের প্রভাবেই হয়।
চিন্তার দাসত্ব সবচেয়ে বিপজ্জনক দাসত্ব, কারণ তুমি বুঝতেও পারো না যে তুমি দাস।
🧑💼চাকরি বনাম নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ
চাকরি একটি স্থিতিশীল জীবিকার মাধ্যম হলেও,
এটা অনেক সময় একজন ব্যক্তিকে তার জীবনের কর্তৃত্ব থেকে বঞ্চিত করে।
চাকরিজীবীকে বলা হয়:
কখন উঠবে, কখন অফিসে যাবে
কবে ছুটি পাবে
কত আয় করবে
কবে পদোন্নতি পাবে, আর কবে নয়
তার দিন শুরু হয় বসের নির্দেশে, শেষ হয় ক্লান্ত দেহ আর অপূর্ণ স্বপ্ন নিয়ে।
অন্যদিকে, একজন উদ্যোক্তা:
নিজের সময় ঠিক করে
নিজের পরিকল্পনা সাজায়
নিজেই তার আয় তৈরি করে
ভুল করলে নিজেই দায় নেয়, শেখে এবং আবার চেষ্টা করে
একজন চাকরিজীবী নিয়মিত আয় পেলেও নিজের জীবনের মালিক নয়।
উদ্যোক্তা অনিশ্চয়তার মাঝে নিজেকে গড়ে তোলে, কিন্তু প্রতিদিন নিজের নিয়মে বাঁচে।
🔥 স্বাধীনতা কোনো বিলাসিতা নয়—এটি একটি সাহসী সিদ্ধান্ত
আজ যদি তুমি সত্যিই স্বাধীন হতে চাও,
তাহলে তোমাকে ভাবতে হবে—
তুমি কী শিখবে, কে ঠিক করবে?
তুমি কত সময় নিজেকে দিতে পারো?
তুমি যা করছো, সেটা কি তোমার নিজের ইচ্ছায় নাকি পরিস্থিতির চাপে?
যদি উত্তর হয় “অন্য কেউ ঠিক করে দিচ্ছে”—তবে তুমি এখনও স্বাধীন নও।
✅ স্বাধীনতা অর্জনের ৫টি ধাপ:
১. নিজের চিন্তা যাচাই করো – যা বিশ্বাস করো, সেটার পেছনে যৌক্তিকতা খোঁজো।
২. নিজের সময়ের মালিক হও – প্রতিদিনের কিছু সময় নিজের ইচ্ছামতো ব্যয় করো।
৩. আয়ের বিকল্প পথ তৈরি করো – একমাত্র উৎস নির্ভরতা তৈরি করে।
৪. চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করো – পরিবর্তন কষ্টকর, কিন্তু মুক্তির পথ।
৫. নিজের মতো করে জীবন সাজাও – সমাজ কী বলবে ভেবে নয়, তুমি কী চাও সেটার ওপর ভিত্তি করে।
📌 উপসংহার:
স্বাধীনতা কেবল একটা দিন উদযাপন নয়,
এটা প্রতিদিনের বাঁচার ধরন।
এটা এমন এক জীবনদর্শন, যেখানে তুমি নিজের অধিকার, দায়িত্ব ও সম্ভাবনার প্রতি সচেতন।
তুমি যদি সত্যিই বাঁচতে চাও, তবে প্রথমেই নিজেকে প্রশ্ন করো—
“তুমি কি স্বাধীন?”
এই প্রশ্নের উত্তর যদি “না” হয়,
তবে আজ থেকেই শুরু করো—একটি নতুন যাত্রা,
যেখানে তুমি নিজের জীবনের চালক, অন্যের নির্দেশে নয়।
📢 তুমি যদি এমন একজন তরুণ হও যে নিজেকে বদলাতে চাও, তবে মনে রেখো— স্বাধীনতা সাহসীদের জন্য, অপেক্ষাকারীদের জন্য নয়।

🎯 সফলতা: সুনির্দিষ্ট চিন্তা, ইমোশন-যুক্তির সমন্বয় এবং অভ্যাসের সম্মিলিত ফলাফল
সফলতা—একটি শব্দ, অথচ কত গভীর ব্যাখ্যা লুকিয়ে রয়েছে এর ভেতর!
অনেকে ভাবে সফলতা হচ্ছে ভাগ্য, সুযোগ, বা কারও বিশেষ সহায়তার ফল।
কিন্তু যারা সত্যিকারের সফল, তারা জানে— সফলতা একটি নির্ধারিত মানসিক কাঠামোর ফল।
আমার নিজের অভিজ্ঞতা ও বিশ্লেষণ থেকে আমি একটি স্পষ্ট সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি:
👉 “সফলতা হচ্ছে সুনির্দিষ্ট চিন্তার ফলাফল, ইমোশন ও যুক্তির সমন্বয় এবং অভ্যাসের সমষ্টি।”
এই উক্তির প্রতিটি অংশ গভীর অর্থ বহন করে। আসুন, আমরা একে একে এই অংশগুলো বিশ্লেষণ করি।
🧠 ১. সুনির্দিষ্ট চিন্তা: লক্ষ্যহীন মন লক্ষ্যহীন জীবন
একটি লক্ষ্যবিহীন নৌকা যেমন সমুদ্রের ঢেউয়ের দয়া-দাক্ষিণ্যে ভেসে বেড়ায়, তেমনি সুনির্দিষ্ট চিন্তাহীন মনও জীবনে দিশাহীনভাবে চলতে থাকে।
সফলতার শুরু হয় একটি স্পষ্ট ও সুসংগঠিত চিন্তা থেকে—
➡️ আমি কী হতে চাই?
➡️ আমার জীবনের আসল উদ্দেশ্য কী?
➡️ আমি কোথায় যেতে চাই এবং কেন?
যে মানুষ নিজেকে নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে ভাবতে পারে, সে-ই নিজের ভবিষ্যৎকে হাতে তুলে নিতে পারে।
❤️🧠 ২. ইমোশন ও যুক্তির সমন্বয়: মস্তিষ্ক ও হৃদয়ের হাত ধরাধরি
একজন মানুষ কেবল যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলে সে যান্ত্রিক হয়ে পড়ে, আর কেবল আবেগ দিয়ে চললে হয়ে ওঠে অস্থির ও ভঙ্গুর।
সফল মানুষ জানে কবে আবেগকে স্থান দিতে হবে, আর কখন যুক্তির কথা শুনতে হবে।
👉 উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি একটি বড় সিদ্ধান্ত নিতে চান— ধরা যাক, চাকরি ছাড়ার বা ব্যবসা শুরুর কথা— সেখানে আবেগ আপনাকে অনুপ্রাণিত করবে, আর যুক্তি দেবে বাস্তবভিত্তিক মূল্যায়ন।
এই দুইয়ের ভারসাম্য না থাকলে আপনি হয় অতি-ঝুঁকিপূর্ণ, নয়তো একদম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বেন।
🔁 ৩. অভ্যাসের সমষ্টি: ছোট কাজের পুনরাবৃত্তি থেকেই গড়ে ওঠে বড় জীবন
“You become what you repeatedly do.”
আমাদের প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাসই আমাদের আগামী জীবনের রূপরেখা তৈরি করে।
যেমন:
প্রতিদিন একটু বই পড়া আপনাকে ভবিষ্যতের বিশেষজ্ঞ বানাতে পারে।
প্রতিদিন সকালে ১০ মিনিটের মেডিটেশন আপনার মনকে দৃঢ় ও প্রশান্ত করতে পারে।
প্রতিদিন একটু ‘না’ বলা শিখলে আপনি নিজের মূল্যবান সময় রক্ষা করতে পারেন।
সুতরাং, অভ্যাসই আসল নায়ক। আপনার অভ্যাসই বলে দেবে আপনি সফল হবেন না ব্যর্থ।
🔍 উপসংহার: আপনি কি নিজের সফলতা নিজেই তৈরি করতে চান?
সফলতা আসলে কোনো ম্যাজিক নয়। এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক গঠন, অভ্যাসগত প্রস্তুতি, ও আবেগ-যুক্তির ভারসাম্যপূর্ণ নকশা।
আপনার সফলতার যাত্রা তখনই শুরু হয়, যখন আপনি নিজের চিন্তা, অনুভূতি ও অভ্যাস নিয়ে সচেতন হন।
🌟 ব্রেইনী ইনস্টিটিউটের আহ্বান:
আমরা বিশ্বাস করি—
👉 চিন্তার বদলই জীবনের বদল আনে।
আপনি যদি নিজের ভেতরের শক্তিকে জাগাতে চান, চিন্তার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে চান, তাহলে সেই পথচলার সহযাত্রী হতে ব্রেইনী ইনস্টিটিউট সবসময় প্রস্তুত।
🖋️ Writer :
Abu Taher, The Thought Changer
Mind Trainer, writer, Teacher
Founder, Brainy Institute
🔖 এই লেখাটি ভালো লেগে থাকলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। আপনি চাইলে আমাদের প্রোগ্রাম, ই-বুক, বা কোর্স সম্পর্কেও জানতে পারেন— বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজে চোখ রাখুন।

আপনি কি কখনো ভেবেছেন—দিন শেষে আপনি কী কী করলেন, কেন করলেন?
তা কি সবকিছু মনে আছে?
নাকি দিন কেটে গেলো অজান্তেই, একঘেয়ে অভ্যাস আর রুটিনের মাঝে?
এটাই হলো অটো পাইলট মোড—যেখানে আপনি নিজেই নিজের জীবন পরিচালনা করছেন না, বরং আপনার অভ্যাস, পূর্ব অভিজ্ঞতা আর অবচেতন মন তা চালাচ্ছে।
🔍 অটো পাইলট মোড কী?
অটো পাইলট মোড হলো এমন একটি মানসিক অবস্থা, যেখানে আমরা দৈনন্দিন কাজগুলো চিন্তা না করেই করে ফেলি। এতে আমাদের সচেতন মন অংশগ্রহণ করে না; বরং অবচেতন মন নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নেয় এবং কাজ করে ফেলে।
যেমন:
গাড়ি চালাতে চালাতে ভাবনার জগতে হারিয়ে যাওয়া
খাওয়ার সময় বুঝতেই না পারা, কখন পুরো প্যাকেটটা শেষ হয়ে গেল
মোবাইল স্ক্রল করতে করতে সময়ের হিসাব হারিয়ে ফেলা
এই সবই অটো পাইলট মোডের নিদর্শন।
🧭 এই মোডের বৈশিষ্ট্যগুলো কী?
✅ অভ্যাস-নির্ভর জীবনযাপন
✅ সচেতন উপস্থিতির ঘাটতি
✅ ভবিষ্যতের পরিবর্তে অতীত-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত
✅ মানসিক অস্থিরতা এবং একঘেয়েমি
✅ অনুভূতির গভীরতার অভাব
🤔 এটি ভালো না খারাপ?
🔹 ভালো দিক:
অটো পাইলট মোড আমাদের মস্তিষ্কের শক্তি সাশ্রয় করে। প্রতিদিনের সহজ, পুনরাবৃত্ত কাজগুলো যেমন দাঁত ব্রাশ করা, চা বানানো, পথ হাঁটা—এসব efficiently সম্পন্ন করতে এটি সাহায্য করে।
🔹 খারাপ দিক:
যদি এই মোডে দীর্ঘ সময় কাটানো হয়, তবে জীবন হয়ে দাঁড়ায় কেবল অভ্যাসের প্রতিচ্ছবি। আপনি নিজের লক্ষ্য, অনুভূতি, এবং সম্ভাবনার সাথে সংযুক্ত থাকতে পারেন না।
এতে যা ঘটে:
আত্ম-উন্নয়ন থেমে যায়
ভুল সিদ্ধান্ত বাড়ে
জীবনের প্রতি আগ্রহ কমে যায়
সৃজনশীলতা হারিয়ে যায়
🛎️ সতর্ক সংকেত: আপনি যদি…
বারবার একই ভুল করেন
জীবনের লক্ষ্য স্পষ্ট নয়
সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাগ্রস্ত
ছোট ছোট আনন্দ উপভোগ করতে ভুলে গেছেন
প্রায়শই মনে হয়, “আমি যেন নিজেই নেই!”
তবে আপনি সম্ভবত অটো পাইলট মোডে চলছেন।
🌟 সমাধান কী? সচেতন জীবনের অভ্যাস গড়ে তোলা
আপনার চিন্তার চাবিকাঠি যদি আপনার হাতে না থাকে, তবে সেটি অন্য কেউ বা পুরনো অভ্যাসই চালাচ্ছে। তাই এই মোড থেকে বেরিয়ে এসে নিজের জীবন নিজে গড়ে তুলুন।
🧘♀️ Mindfulness অনুশীলন করুন
📒 নিজেকে প্রতিদিন লিখে জিজ্ঞাসা করুন: “আমি কী সচেতনভাবে এই কাজটি করছি?”
🎯 লক্ষ্য নির্ধারণ করুন ও তার প্রতি সজাগ থাকুন
🔁 অকারণে স্ক্রলিং, রুটিন-মতো কাজ করা, ইত্যাদি আচরণগুলো পর্যবেক্ষণ করুন
🔚 শেষ কথা: জীবনটা চালানোর জন্য আপনার উপস্থিতি দরকার
আপনি যদি নিজেই না থাকেন নিজের জীবনের ড্রাইভিং সিটে, তাহলে গন্তব্য কোথায় যাবে সেটাও আপনি জানবেন না।
সুতরাং, এখনই সময় নিজেকে জাগানোর—অটো পাইলট বন্ধ করে, সচেতনভাবে জীবন গড়ার।
✍️ Writer : Abu Taher, The Thought Changer
Mind Trainer, Writer, Teacher

🔍 ভূমিকা
আমরা প্রায়ই দেখি, কেউ সামান্য বিরোধিতা সহ্য করতে পারে না, কেউ আবার অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে হঠাৎ রেগে যান। কেন এমন হয়? সত্যিকার অর্থে, এই রাগ কি শুধু পরিস্থিতির ফল? নাকি এর গভীরে রয়েছে আমাদের মানসিক কাঠামোর কোনো অদৃশ্য বাঁধন?
আজকের আলোচনায় আমরা জানব, কীভাবে অর্জন, খ্যাতি বা সামাজিক সম্মান আমাদের আত্মার উপর অহংকারের এক অদৃশ্য আস্তরণ সৃষ্টি করে, এবং সেটিই আমাদের রাগ, প্রতিক্রিয়া ও মানসিক অস্থিরতার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
🧠অর্জন ও অহংকারের সূক্ষ্ম সম্পর্ক
মানুষ যখন জীবনে কিছু অর্জন করে—হোক তা নাম, খ্যাতি, অর্থ, কিংবা প্রভাব—তখন ধীরে ধীরে তার ভেতরে জন্ম নিতে শুরু করে একটি অদৃশ্য অহং। এটি তেমন কিছু নয় যেটা হাত দিয়ে ধরা যায়, কিন্তু তার প্রভাব থাকে প্রতিটি আচরণ, মনোভাব ও সিদ্ধান্তে।
এই অহংকার ধীরে ধীরে আত্মার উপর একটি আস্তরণ তৈরি করে, যেটি ব্যক্তি নিজেও সচেতনভাবে উপলব্ধি করতে পারেন না। তাকে মনে হয়, 'এটাই আমি', কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি ‘আমি’-এর একটি তৈরি করা রূপ, যাকে বলা যায় মিথ্যা আত্মপরিচয় (False Self)।
😠অহংকার থেকে রাগের জন্ম
এই অহংকারপূর্ণ চাদর যখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন ব্যক্তির আত্মপরিচয় সেটির সাথেই একাত্ম হয়ে পড়ে। ফলে, কেউ যদি তার মতের বিরোধিতা করে, তার অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করে, অথবা তাকে অগ্রাহ্য করে—তখন তার আত্মা নয়, বরং এই আহত অহং প্রতিক্রিয়া জানায় রাগের মাধ্যমে।
রাগ এখানে হয়ে যায় আত্মরক্ষার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং অহংকার রক্ষার চেষ্টা।
🧘 আত্মসচেতনতা: মুক্তির পথ
আমরা যদি বুঝতে পারি, রাগ আসে আমাদের 'সত্তা' থেকে নয়, বরং অহংকারের তৈরি আস্তরণ থেকে—তাহলে রাগ নিয়ন্ত্রণের প্রথম ধাপটি পার হয়ে যাই।
এখান থেকেই শুরু হয় আত্মসচেতনতার পথচলা। এই চর্চা মানুষকে নিজের আসল সত্তার সঙ্গে যুক্ত হতে সাহায্য করে—যেখানে অহং নেই, প্রতিক্রিয়া নেই, আছে কেবল উপলব্ধি ও উপলব্ধির পরিপক্বতা।
✨উপসংহার
রাগ বা প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে আমাদের প্রথমেই বুঝতে হবে—
> "রাগ আত্মা থেকে আসে না, আসে অহং থেকে। আর অহং তৈরি হয় অর্জনের মধ্য দিয়ে, যদি না থাকে আত্মসচেতনতা।"
এই উপলব্ধিই হতে পারে আপনার মানসিক প্রশান্তি, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সত্যিকারের নিজেকে জানার প্রথম ধাপ।
📌 ব্রেইনী ইনস্টিটিউটে আমরা এই রকম গভীর মনো-বিশ্লেষণ ও সচেতনতার অনুশীলন নিয়ে কাজ করি। আমাদের "Control Your Thoughts" প্রোগ্রামে আপনি শিখবেন—
কিভাবে চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করবেন,
কীভাবে আত্মা ও মনের পার্থক্য বুঝবেন,
আর কীভাবে অহংকারের চাদর সরিয়ে নিজের আসল সত্তাকে চিনবেন।

আপনার চিন্তাই আপনার ভাগ্য নির্ধারণ করে—তবে সেই
চিন্তার নিয়ন্ত্রণটা কার হাতে?
আমরা প্রতিদিন অসংখ্য সিদ্ধান্ত নিই, প্রতিটি সিদ্ধান্তের পেছনে থাকে একটি চিন্তা। কিন্তু সেই চিন্তাগুলোর জন্ম কোথা থেকে হয়? আপনি নিজে কি সত্যিই আপনার চিন্তাগুলোর নিয়ন্ত্রণে আছেন, নাকি অজান্তেই আপনি আপনার জীবনের নিয়ন্ত্রণ অন্যের হাতে তুলে দিচ্ছেন?
🎯বাস্তবতা হচ্ছে—
বেশিরভাগ মানুষ নিজের চিন্তা নিজে নিয়ন্ত্রণ করে না। তারা পরিচালিত হয়—
সমাজের তৈরি করা নিয়মে,
অন্যের প্রত্যাশায়,
অতীতের ব্যর্থতা ও ভয়ের দ্বারা।
এভাবে ধীরে ধীরে আমাদের চিন্তার রিমোট কন্ট্রোল চলে যায় অন্য কারো হাতে, যার কারণে নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণও হাতছাড়া হয়।
🌱 আমাদের চিন্তার ৩টি মূল উৎস
1️⃣ অভিজ্ঞতা
শৈশবের তিক্ত স্মৃতি, ব্যর্থতার যন্ত্রণা কিংবা কিছু সফল মুহূর্ত আমাদের চিন্তার গঠন তৈরি করে। এগুলো কখনো কখনো ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে অবরুদ্ধ করে ফেলে।
2️⃣ পরিবেশ
পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী, সোশ্যাল মিডিয়া, এমনকি শিক্ষাব্যবস্থা পর্যন্ত আমাদের মানসিক গঠনে গভীর প্রভাব ফেলে।
3️⃣ বিশ্বাস
নিজের সম্পর্কে আমরা যেসব বিশ্বাস পোষণ করি যেমন— "আমি পারবো না", "আমি তেমন কিছু নই", এগুলোর বেশিরভাগই সত্য নয় বরং গড়ে ওঠে অভিজ্ঞতা ও পরিবেশ থেকে প্রাপ্ত নেতিবাচক বার্তার কারণে।
🔓সমাধান: চিন্তার রিমোট কন্ট্রোল ফিরে নিন নিজের হাতে
আপনি যদি নিজেই আপনার চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করতে শেখেন, তাহলে আপনি শুধু আপনার মন নয়, পুরো জীবনকে রিডিজাইন করতে পারবেন।
✔️ করণীয়:
✅ প্রতিদিন নিরিবিলি কিছু সময় নিজের সাথে কাটান এবং আপনার ভাবনা লিখে ফেলুন
✅ নেতিবাচক চিন্তা দেখলেই নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন: "এই ভাবনার প্রমাণ কোথায়?"
✅ নিজেকে প্রতিদিন বলুন: “আমি পারি”, “আমার মধ্যে অসীম শক্তি আছে”
✅ সময় দিন মানসিক প্রশিক্ষণে—যেমন Brainy Institute-এর ‘Control Your Thoughts’, ‘Thinknova’ প্রোগ্রাম
📢 মনে রাখবেন:
চিন্তা হলো বীজ।
আপনি যা ভাবেন, তা-ই আপনি করেন। আর আপনি যা করেন, তা-ই গড়ে তোলে আপনার ভবিষ্যৎ।
তাই, এখনই সময় এসেছে আপনার চিন্তার রিমোট কন্ট্রোল অন্যের হাত থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার। নিজের জীবনকে নিজের মতো করে গড়ে তোলার।
🎯 এখন সিদ্ধান্ত আপনার:
আপনি কি আপনার চিন্তার নিয়ন্ত্রণ নিজে রাখতে চান, না অন্যদের হাতে তুলে দিতে চান?
আপনার মনই হতে পারে আপনার সফলতার শ্রেষ্ঠ সম্পদ—শুধু দরকার সঠিক দিশা।
🔥 এখনই ‘Thinknova’ প্রোগ্রামে অংশ নিন এবং শুরু করুন আপনার মানসিক রূপান্তরের জার্নি!
👉 এখনই সিদ্ধান্ত নিন—আপনার চিন্তার রিমোট কন্ট্রোল আপনি নিজে ধরে রাখবেন, নাকি অন্যের হাতে দিয়ে জীবনকে নিয়ন্ত্রণহীন করে তুলবেন?

জীবনে আমরা অনেকেই সুখ, সাফল্য, মানসিক শান্তি বা আত্মবিশ্বাসের জন্য বাহ্যিক কিছু পরিবর্তনের আশা করি। কিন্তু খুব কম মানুষ জানে, প্রকৃত পরিবর্তনের সূত্র লুকিয়ে আছে আমাদের চিন্তাভাবনার গভীরে।
আমাদের চিন্তা যেমন, তেমনই গঠিত হয় আমাদের অভ্যাস, সিদ্ধান্ত, এমনকি ভবিষ্যৎও।
🌱চিন্তা কীভাবে আমাদের জীবন পরিচালনা করে?
একজন ব্যক্তি যদি বারবার নিজের মধ্যে ব্যর্থতা, ভয় ও হতাশার চিন্তা করতে থাকে—তবে সে অবচেতনভাবে নিজের জীবনের পথকেই অন্ধকার করে তোলে। আবার, কেউ যদি নিজেকে আত্মবিশ্বাসী, সক্ষম ও সৃজনশীল ভাবতে থাকে—তবে সময়ের ব্যবধানে সেই ভাবনাই বাস্তব রূপ নিতে শুরু করে।
এটি শুধুমাত্র ধারণা নয়, এটি মনস্তত্ত্ব ও নিউরোসায়েন্স দ্বারা প্রমাণিত একটি বাস্তব সত্য।
🔄 আপনার জীবন বদলাতে চাইলে বদলে ফেলুন আপনার চিন্তাভাবনা।
➡️ চিন্তা থেকে জন্ম নেয় অনুভব
➡️ অনুভব থেকে জন্ম নেয় অ্যাকশন
➡️ অ্যাকশন থেকে জন্ম নেয় অভ্যাস
➡️ অভ্যাস থেকে গড়ে উঠে ব্যক্তিত্ব
➡️ আর ব্যক্তিত্বই গঠন করে আপনার ভবিষ্যৎ।
এই কারণেই বলা হয় :
👉 “আপনি যেমন ভাবেন, আপনি তেমনই হয়ে উঠেন।”
🛠️ নেতিবাচক চিন্তা কীভাবে ধ্বংস ডেকে আনে?
নেতিবাচক চিন্তা আমাদের মধ্যে করুণার পরিবর্তে ক্রোধ, আশার পরিবর্তে হীনমন্যতা এবং সাহসের পরিবর্তে সন্দেহ সৃষ্টি করে। এগুলো ধীরে ধীরে আমাদের সিদ্ধান্তের ওপর প্রভাব ফেলে এবং জীবনে হতাশা, স্থবিরতা ও দুর্বলতা সৃষ্টি করে।
🌟 ইতিবাচক চিন্তার শক্তি :
ইতিবাচক চিন্তা কোনো অলীক কল্পনা নয়। এটি এমন এক শক্তি, যা মানুষকে দুঃসময়েও স্থির থাকতে সাহায্য করে, ব্যর্থতাকে শেখার সুযোগে রূপান্তর করে এবং প্রত্যেকটি চ্যালেঞ্জকে সম্ভাবনায় পরিণত করে।
🧘♀️ কীভাবে শুরু করবেন?
১. চিন্তাকে পর্যবেক্ষণ করুন: আপনি কী ভাবছেন, সেটা প্রথমেই সচেতনভাবে খেয়াল করুন।
২. নিজের সাথে ইতিবাচক কথা বলুন: বারবার বলুন, “আমি পারি”, “আমি বদলাতে পারি”, “আমার জীবনের নিয়ন্ত্রণ আমার হাতে।”
৩. পজেটিভ মানুষদের সাথে থাকুন: যারা আপনাকে উৎসাহ দেয়, সেই মানুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ুন।
৪. নিজেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিন: শারীরিক ব্যায়াম, মেডিটেশন বা থট-ট্রেনিং গ্রহণ করুন, যাতে মস্তিষ্ক শান্ত ও মনোযোগী থাকে।
🎯 শেষ কথা
আপনি যদি সত্যিই চান জীবনে বড় কিছু অর্জন করতে, তবে প্রথমে নিজের চিন্তাকেই নতুন করে গড়ে তুলুন। আজকের প্রতিটি ইতিবাচক চিন্তা আপনাকে কালকের সফল, শান্ত ও অনুপ্রাণিত মানুষে পরিণত করবে।
💬 জীবন বদলাতে চাইলে প্রথমে বদলান আপনার চিন্তা। কারণ চিন্তার মধ্যেই লুকিয়ে আছে আপনার ভবিষ্যৎ।
✍️ লেখক:
আবু তাহের, দ্য থট চেন্জার
মাইন্ড ট্রেইনার ও প্রতিষ্ঠাতা, Brainy Institute
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author
Abu Taher
Author